বগুড়া সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাহবুব আলম শাহীনের হত্যা রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার ও তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার হয়েছে।
বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের নেতৃত্ব নিয়ে সৃষ্ট কোন্দলের জের ধরেই খুন হয়েছেন বিএনপি নেতা শাহীন। গ্রেফতারকৃতরা- হলো বগুড়া শহরের নিশিন্দারা এলাকার মৃত কালুর ছেলে পায়েল শেখ (৩৫) ও নিশিন্দারা মন্ডল পাড়ার আবু তাহেরের ছেলে রাসেল (২৮)।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টায় বগুড়া পুলিশ সুপারের কনফারেন্স রুমে প্রেস ব্রিফিং এ বগুড়া পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম এ তথ্য নিশ্চিত জানান।তিনি জানান, বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের নেতৃত্ব নিয়ে সৃষ্ট কোন্দলের জের ধরেই খুন হয়েছেন বিএনপি নেতা অ্যাড. মাহবুব আলম শাহীন। হত্যাকান্ডের কয়েক ঘন্টা আগে মোটর মালিক গ্রুপের এক নেতার অফিসে বসে এই গোপন বৈঠক হয়। ওই গোপন বৈঠক থেকে শাহীনকে নিষ্ক্রিয় করার সিদ্ধান্ত হয়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই নেতার ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং আরো ১ জন তাদের নিজস্ব লোকজনদের খবর দেয় এবং চারটি মোটরসাইকেল নিয়ে উপশহর বাজারের দিকে যায়। সেখানে খুনের অপেক্ষায় থাকে তারা। ঘটনাস্থলে খুনিদের পক্ষের একজন অবস্থান করছিল। সে খুনিদের সংবাদ দিলে পায়েল শেখ ও মো: রাসেল সহ আরো ৮ থেকে ৯ জন ঘটনাস্থলে যায়। খুনের আগে শাহীন সদর উপজেলার নুনগোলা ইউপি চেয়ারম্যান আলিমুদ্দিন এবং মোটর মালিক সমিতির হিসাবরক্ষক মো: বাপ্পির সাথে গল্প করছিল। গল্পের এক পর্যায়ে অ্যাডভোকেট শাহীন মোবাইলে কথা বলতে বলতে একটু সরে গেলে সুযোগ বুঝে আসামিরা তাকে উপর্যুপরি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায় এবং ছুরিকাঘাত করে ফেলে রেখে দ্রুত ১০ তলা ভবনের পাশ দিয়ে নিশিন্দারা দিকে চলে যায়।
গুরুতর আহত অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম শাহীনকে চেয়ারম্যান আলীম উদ্দিন এবং বাপ্পি একটি ইজিবাইকে করে তুলে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
পুলিশ সুপার আরো জানান, ১৭ এপ্রিল ভোরে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সদর উপজেলার নিশিন্দারা মধ্যপাড়ার রাসেলকে (২৮) গ্রেফতার ও হত্যাকান্ডে ব্যবহার হওয়া কালো রঙের পালসার মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। আটককের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য মতে, পায়েল শেখকে (৩৫) গাবতলী উপজেলার কাগইল ইউনিয়নের আমলি চুকাই গ্রামের তার মেয়ের শ্বশুড়বাড়ি থেকে আটক করা হয়। নিশিন্দারা কালু শেখের ছেলে পায়েলের নামে বগুড়া সদর থানায় ৯টি মামলা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার গ্রেফতারকৃত দুইজনকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এর আগে গত ১৬ এপ্রিল নিহত শাহীনের স্ত্রী আকতার জাহান শিল্পী মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় ছয় জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত আরও পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৪ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০ টায় বগুড়া শহরের উপশহর বাজারে দুর্বৃত্তরা শাহীনের উপর হামলা চালিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারি কুপিয়ে হত্যা করে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার