আবরার হত্যায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), কুষ্টিয়া। আজ রবিবার সকাল ১০ টায় শহরের থানার মোড়স্থ বকচত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একের পর এক রক্তক্ষয়ী ছাত্র সহিংসতা, ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম, দলীয় রাজনৈতিক প্রভাবদুষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পৃষ্ঠপোষকতা এবং একই কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যত নিষ্ক্রিয়তার ফলে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী আদর্শিক ছাত্র আন্দোলনের অস্তিত্ব সংকটের মুখোমুখি।
আবরার হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ এবং ছাত্র আন্দোলনের গৌরবময় ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সকল ছাত্রসংগঠনসহ শিক্ষাঙ্গণকে সম্পূর্ণ দলীয় রাজনীতিমুক্ত করা এবং শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষায় বলীয়ান করার কোনও বিকল্প নেই বলে মনে করেন তারা।
বক্তারা বলেন, বুয়েটের ছাত্র আবরারের নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে একদিকে বাকস্বাধীনতার ওপর নিষ্ঠুরতম আঘাত, অন্যদিকে আবরার হত্যায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করণ এবং মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে হস্তান্তর করণের মাধ্যমে দ্রুত শাস্তি বাস্তবায়নের দাবি জানান।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও সনাক’র সহ-সভাপতি ড. সরওয়ার মুর্শেদ বলেন, বাকস্বাধীনতা এবং মুক্তমত প্রকাশের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং রাষ্ট্রকে দায়িত্ব নিতে হবে। বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনের যে গৌরবোজ্জ্বল অতীত ও অবিস্মরণীয় ভূমিকা তাকে ম্লান করে দিচ্ছে ছাত্রসংগঠনের ওপর দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতির নিষ্ঠুর প্রভাব। আর কোন আবরার যেন মত প্রকাশ করতে যেয়ে প্রাণ না হারায় সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধি করতে হবে। হত্যায় জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
আবরারের শিক্ষক, কুষ্টিয়া জেলা স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক ও স্বজন সমন্বয়ক খোন্দকার আমানুল্লাহ বলেন, অত্যন্ত বিনয়ী, সদালাপী, নিরহংকারী এবং দেশভক্তি ছিল আবরারের চরিত্রের প্রধান দিক। একজন শিক্ষক হিসেবে ওর হত্যাকারীদের ফাঁসি কার্যকর দেখতে চাই।
এছাড়া মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন,সনাক সভাপতি নজরুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সনাক সদস্য রফিকুল আলম টুকু , সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও কুষ্টিয়া রবীন্দ্র সম্মেলন পরিষদ এর সভাপতি আলম আরা জুই, সমাজকর্মী কারসেদ আলম, মানবাধিকার কর্মী তাজনিহার বেগম, মানবাধিকার কর্মী জেসমিন হোসেন মিনি, সনাক সদস্য আক্তারী সুলতানা প্রমুখ। কুষ্টিয়ার বীরমুক্তিযোদ্ধা, সমাজকর্মী, মানবাধিকার ও উন্নয়নকর্মী, শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ, সাংস্কৃতিক কর্মী, নানা শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
বিডি-প্রতিদিন/ সিফাত আব্দুল্লাহ