শরীয়তপুর নড়িয়া উপজেলায় এক কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় আসামিদের ফাঁসি চেয়ে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধনে অংশ নেন ভিকটিমের পরিবার, বিঝারী এলাকাবাসী ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্বারকলিপি প্রদান করা হয়।
জানা গেছে, কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে নড়িয়া থানা পুলিশ। শনিবার দিবাগত রাতে ঢাকা শ্যামপুর থেকে তিনজন ও জাজিরা উপজেলার মঙ্গলমাঝিরঘাট এলাকা থেকে একজনকে আটক করে পুলিশ। আটকরা হলেন নড়িয়া উপজেলার বিঝারি ইউনিয়নের কান্দিগাঁও গ্রামের জয়নাল মোল্লার ছেলে বেলায়েত হোসেন শৃঙ্খল মোল্লা (২৫), আলমগীর মোল্লার ছেলে মুরাদ মোল্লা (২২), সদর উপজেলার দাত্রা গ্রামের কালু সরদারের ছেলে হৃদয় সরদার (২৫) ও কাশেম সরদারের ছেলে আরিফ সরদার (২৩)।
মানববন্ধনে এসে শিক্ষার্থীরা বলেন, পূর্বেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এ ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়? আমরা স্কুল-কলেজে স্বাধীনভাবে যেতে চাই। আমরা আর ধর্ষণের শিকার হতে চাই না। তাই ধর্ষকদের ফাঁসি চাই।
উল্লেখ্য,শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় এক কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার বিঝারি ইউনিয়নের কান্দিগাঁও এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আজ শনিবার সকালে নড়িয়া থানায় একটি মামলা হয়েছে।
পুলিশ, ওই ছাত্রী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ছাত্রী স্থানীয় একটি কলেজের ডিগ্রির দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে শরীয়তপুর সরকারি কলেজে বড় বোনের একটি মিটিংয়ে যোগ দিতে আসেন ওই ছাত্রী। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মিটিং শেষে অটোরিকশায় করে পালং উত্তর বাজার দিয়ে কানার বাজারে যান তিনি। সেখান থেকে আবার নিজ এলাকা নড়িয়া কাপাশপাড়া যাওয়ার জন্য অটোরিকশা না পেয়ে হাঁটতে থাকেন ঐ কলেজছাত্রী। হাঁটতে হাঁটতে কান্দিগাঁও এলাকায় পৌঁছলে ফাঁকা সড়কে ওই এলাকার জয়নাল মোল্লার ছেলে শৃঙ্খল মোল্লা (২৫) তাকে জোর করে নিপু খাঁর মাছের প্রজেক্টের ঝোপঝাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে শৃঙ্খল ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। পরে শৃঙ্খলের তিন বন্ধু কালু শিকদারের ছেলে হৃদয় শিকদার (২৫), আলমগীর মোল্লার ছেলে মুরাদ মোল্লা (২২) ও কাশেম সরদারের ছেলে আরিফ সরদার (২৩) মুখ চেপে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
হাসপাতালে ভর্তি ওই ছাত্রী বলেন, ‘আমার সঙ্গে শৃঙ্খল, হৃদয়, মুরাদ ও আরিফ খারাপ কাজ করেছে। তাদের হাত-পায়ে ধরলেও আমাকে ছাড়েনি । আমার স্বর্ণের চেইন, কানের দুল, আংটি, রুপার নুপুরসহ নগদ ৫ হাজার টাকা নিয়ে যায় ওরা।’ ওই ছাত্রীর বাবা কান্না বিজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার মেয়েকে ওরা খারাপ কাজ করেছে। মেয়েকে এখন কিভাবে বিয়ে দেব, গ্রামে কেমনে মুখ দেখাবো? আমার মেয়েকে যারা খারাপ কাজ করেছে তাদের আইনের আওতায় এনে ফাঁসি দেয়া হোক।’
বিডি-প্রতিদিন/শফিক