৩০ নভেম্বর, ২০২০ ১৬:৫৩

গলাচিপায় তৈরি হচ্ছে জামদানি শাড়ি

গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

গলাচিপায় তৈরি হচ্ছে জামদানি শাড়ি

ইমন, জুম্মন, রাসেল, হৃদয়, আজিজুল ও কাওসার। ওরা ৬ জন ক্ষুদে কারিগর। ওদের বয়স ১৪ থেকে ১৬। নারায়নগঞ্জের একটি জামদানি শাড়ি তৈরির কারখানায় এরা সকলে কাজ করতো। দীর্ঘ ৪ বছর তারা ওই কারখানায় একাগ্রতার সাথে কাজ করে হয়ে যায় শাড়ি বুননের কারিগর। এদের সকলের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার নান্দাইল উপজেলার কচুরিয়া গ্রামে। 

পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার সদর ইউপি’র ইটবাড়িয়া এলাকায়  রুবেল হাসান বাবুর অনুপ্রেরণায় এরা জামদানি শাড়ি তৈরির কারখানা গড়ে তোলে। প্রথমবারের মতো এ এলাকায় গড়ে ওঠে শাড়ি তৈরির কারখানাটি। এ কারখানার কারিগরের শাড়ি বুনন দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার মানুষ দেখতে এসে ভিড় করে। অনেকের মধ্যেই এধরনের কারখানা গড়ার আগ্রহ সৃষ্টি হয়। 

গলাচিপা সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা রুবেল হাসান বাবু প্রধান কারিগর ইমনের ভগ্নিপতি। তার সুবাদে এ এলাকায় তারা জামদানি শাড়ি তৈরির কারখানা গড়ে তোলেন। মাত্র ২ মাস আগে যাত্রা শুরু করেন তারা। কিন্তু পূঁজি স্বল্পতা তাদের এ কারখানার মজবুত ভীত গড়া অন্তরায় হয়ে পড়েছে বলে জানান কারখানার মালিক রুবেল হাসান বাবু। 

নারায়নগঞ্জের এক মহাজনের কাছ থেকে প্রতিদফায় ২০ হাজার টাকার সুতা এবং অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়। বাজার দরের চেয়ে কিছুটা বেশি দামেই তাদের মালামাল সরবরাহ করেন মহাজন। ফলে তাদের উৎপাদন খরচও বেড়ে যায়। এ ক্ষুদে কারিগররা শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহের ৬দিনে ২টি শাড়ি তৈরি করতে পারেন। উৎপাদিত শাড়ির বেশিরভাগই বিক্রি করতে হয় সরঞ্জাম সরবরাহকারী মহাজনের কাছে। 

এ কারখানার মালিক রুবেল হাসান বাবু জানান, শাড়ি প্রতি ৭০০-৮০০ টাকা লাভ হয়। পূঁজি স্বল্পতায় কারাখানার পরিধি ও উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না বলে তিনি জানান। 

কারিগর ইমন জানান, চাইলে স্থানীয়রাও এ শাড়ি কিনতে পারবেন। মানভেদে প্রত্যেকটি শাড়ির সর্বনিম্ন দাম রয়েছে ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকা। শাড়ি তৈরির খরচের পর কিছু লাভ হয়। 

ইমন আরও জানান, সরকারি, বেসরকারি সহায়তা পেলে সফলতা হাতের নাগালে এসে যাবে। এছাড়া পায়রা বন্দর ঘিরে দক্ষিনাঞ্চলে এ ধরনের কারখানা আরও গড়ে ওঠলে উৎপাদিত শাড়ি রফতানি করে প্রচুর পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব হবে। 

পর্যাপ্ত পরিমান টাকা সংগ্রহ করতে পারলে এখানে ভাল একটি বড় ধরনের কারখানা গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে উদ্যোক্তা বাবু জানান।
 
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশিষ কুমার জানান, নিঃসন্দেহে এটি একটি ভাল উদ্যোগ। প্রয়োজনে আরও লোকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে কারিগর তৈরি করা হবে। 

তিনি আরও বলেন, এলাকার বিত্তবানদের এ ব্যাপারে এগিয়ে আসা উচিত। উৎপাদন ও পরিধি বাড়াতে প্রয়োজনে সরকারি সহায়তা প্রদান করা হবে।  

 

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর