কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার কুন্দারঘোড়া গ্রামে বরবটি চাষের একটি ব্যতিক্রমী দৃশ্য এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। জমিতে চাষের সময় কৃষক ও শ্রমিকরা পরছেন মাস্ক, গ্লাভস ও ক্যাপ। সবজির জমি যেন রীতিমতো একটি গবেষণাগার। সেখানে রয়েছে কড়া নির্দেশনা- জমিতে খাওয়াদাওয়া, ধূমপান বা যত্রতত্র চলাফেরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
এই অভিনব উদ্যোগটি কৃষি মন্ত্রণালয়ের পার্টনার প্রকল্পের আওতায় "উত্তম কৃষি চর্চা" অনুসরণ করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, যার লক্ষ্য হলো সবজি রপ্তানিযোগ্য ও বিষমুক্ত করা। জমিতে গিয়ে দেখা গেছে, স্থানীয় কৃষক আবুল কালাম আজাদ এক একর জমিতে এই পদ্ধতিতে বরবটি চাষ করছেন। জমিতে প্রবেশকারীদের সবাইকে মাস্ক, গ্লাভস ও ক্যাপ পরে ঢুকতে হচ্ছে। মাচায় দুলছে লম্বা বরবটি, যেন কারও কানে দুলছে ঝুমকা। পোকা দমনে ব্যবহার করা হয়েছে হলুদ আঠালো পাতা ও সেক্স ফেরোমোন ফাঁদ, যা ক্ষতিকর পোকা নিধনে কার্যকর।
বরবটি চাষে নামমাত্র রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয়েছে এবং জৈব সার ও জৈব বালাইনাশকের মাধ্যমে চাষাবাদ হয়েছে। এক একটি বরবটি প্রায় দুই হাত লম্বা এবং ফলন বেশ সন্তোষজনক। স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাহিদা খাতুন মাঠ পর্যায়ে চাষিদের গাইডলাইন দিচ্ছেন।
স্থানীয় কৃষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় এই পদ্ধতিতে চাষ করেছি। বিষমুক্ত হওয়ায় আমাদের বরবটির চাহিদাও ভালো। ফলনও বেশ হয়েছে।
আরও কয়েকজন কৃষক আবু বকর শিবলী, মনির হোসেন ও মন্তু মিয়া বলেন, গ্লাভস, মাস্ক ও ক্যাপ পরে সবজি চাষ জীবনে প্রথম দেখলাম। তবে ফলন ভালো এবং দামও বেশি। আমরাও এই পদ্ধতি অনুসরণ করবো।
উপজেলা কৃষি অফিসার জোনায়েদ কবির খান বলেন, পার্টনার প্রকল্পের আওতায় "উত্তম কৃষি চর্চা" অনুসরণ করে চাষ একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। এতে বিষমুক্ত ও নিরাপদ সবজি উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে, যা মানুষের স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ- উভয়ের জন্যই উপকারী। এই সবজি রপ্তানির সুযোগও রয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ