রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) কক্ষে মোফাজ্জল হোসেন (২৬) নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলাটির তদন্তভার নিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। দামকুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, পুলিশ সদর দফতরের এক আদেশের প্রেক্ষিতে মামলার নথিপত্র দুইদিন আগে সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। সিআইডি মামলাটির তদন্ত করবে। ওসি জানান, মামলা দায়েরের পর তারা কোন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেননি। তবে মামলার দুই নম্বর আসামি হরিপুর ইউপির চেয়ারম্যান বজলে রেজবী আল হাসান মুঞ্জিল আদালতে জামিন নিয়েছেন।
গত ২৯ নভেম্বর সকালে হরিপুর ইউপি কার্যালয়ের একটি কক্ষ থেকে মোফাজ্জলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত মোফাজ্জল রাজশাহীর তানোর উপজেলার যুগলপুর গ্রামের ইসরাফিল ম-লের ছেলে। মৃত্যুর ১২ দিন আগে পবার হরিপুর ইউনিয়নের নলপুকুর গ্রামে বিয়ে করেন। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ি গেলেও মোফাজ্জলের স্ত্রী বাবার বাড়ি চলে আসেন। তিনি আর যেতে চাচ্ছিলেন না। কিন্তু মোফাজ্জল তাকে নিতে শ্বশুরবাড়ি আসেন। বিষয়টির সমাধানে ২৮ নভেম্বর ইউপি কার্যালয়ে দুইপক্ষের লোকজন চেয়ারম্যানের সঙ্গে বসেছিলেন। ওই রাতে মোফাজ্জলকে ইউপি কার্যালয়ের একটি কক্ষে আটকে রাখেন চেয়ারম্যান। ভোরে তার লাশ পাওয়া যায়।
স্বজনদের অভিযোগ, মোফাজ্জলকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। এনিয়ে নিহতের ভাই উজ্জল বাদী হয়ে দামকুড়া থানায় হত্যামামলা করেন। মামলায় নিহত মোফাজ্জলের শ্বশুরকে প্রধান আসামি করা হয়। এছাড়া মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান, মোফাজ্জলের স্ত্রী এবং শাশুড়িসহ অজ্ঞাত আরও ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার পর একজনও গ্রেফতার হননি। এরই মধ্যে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে থানায়।
এতে বলা হয়েছে, মোফাজ্জল গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন নিহত মোফাজ্জলের পরিবার। তাদের দাবি, তার ভাই আত্মহত্যা করতে পারেন না। তাকে হত্যায় করা হয়েছে। নিহত মোফাজ্জলের ভাই তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘মামলার একজন আসামিও গ্রেফতার হয়নি। আমরা গরীব বলে কি ভাই হত্যার বিচার পাব না?’ তিনি বলেন, মামলাটি এখন সিআইডিতে গেছে। সিআইডি প্রকৃত রহস্য উন্মোচন করবে বলে আশা করি।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর