বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় দফায় দফায় বন্যা ও যমুনা নদীর ভাঙনে চলাচলের গুরত্বপূর্ণ মোকামতলা টু সারিয়াকান্দি সড়কটি এখন বেহাল দশায় পড়ে আছে। সড়কের প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের অভাবে কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় এখন মরণ ফাঁদ হয়ে আছে।
দিনে রাতে চলাচল করতে গিয়ে উপজেলাবাসীকে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। দুর্ভোগে পড়া এলাকাবাসী সড়কগুলোর সংস্কার দাবি করেছেন।
বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রয়াত এমপি আব্দুল মান্নানের প্রচেষ্টায় ২০১০ সালে ডিসেম্বরে বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগ কর্তৃক গ্রামীণ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মোকামতলা, সোনাতলা, হরিখালি হাট শেরপুর ও সারিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের উত্তর পাশ পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটার পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়।
এই সড়ক দিয়ে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা থেকে সোনাতলা ও সারিয়াকান্দি উপজেলায় সরাসরি যোগাযোগ হয়ে থাকে। তিন উপজেলা নিয়ে নির্মাণ করা সড়কটির স্থানীয়রা নামকরণ করেছে মোকামতলা টু সারিয়াকান্দি সড়ক। আর এই সড়কের মধ্যেই পড়ে সোনাতলা উপজেলা।
দীর্ঘ এই সড়কটি নির্মাণের পর এলাকার মানুষের মাঝে বেশ আনন্দ প্রকাশ করে। সড়কটি নির্মাণ হওয়ার কারণে সড়কের আশপাশের প্রায় ৫০ গ্রামের মানুষের যাতায়াতের নতুন দিগন্ত সূচনা হয়। ৫০ গ্রামের কৃষিপণ্য ধান, মরিচ, পাট, আলু পরিবহনে খরচ কমে গিয়ে কৃষক বেশি আয় করতে পারে।
গ্রামে গ্রামে আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যুব ক্লাব গড়ে ওঠার পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণাও তড়িৎ হয়ে ওঠে। নির্মাণের পর গত দশ বছরে দফায় দফায় বন্যায় সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বন্যার পাশাপাশি অতিবৃষ্টিতে পড়ে সড়কটির বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত হয়। সর্বশেষ চলতি বছরে করোনার মধ্যে সারিয়াকান্দি উপজেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা নদীতে ৪ দফা বন্যায় সড়কটি আরো বেহাল হয়ে যায়। বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে ৪০ কিলোমিটারের সড়কটির ২০ কিলোমিটার বেহাল বলে দাবি করা হয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বগুড়ার সোনাতলা হরিখালি হাট হতে শেরপুর ভায়া সারিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদ পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পাকা সড়কের কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে পাকা সড়কে পাকুল্লা, আচার পাড়া, সানবান্ধা, নিজবলাইল, খোর্দ্দবলাইল, অন্তারপাড়া ও পারতিতপরল হয়ে উপজেলা পরিষদ এলাকা পর্যন্ত বেশি ঝুঁকি পূর্ণ হয়ে পড়েছে।
প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে সোনাতলা ও উত্তর সারিয়াকান্দির প্রায় ৫০ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করেন। সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে দুর্ভোগের শেষ নাই। সড়কটি তৈরির পর হতে গত ১০ বছরে বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড রক্ষণাবেক্ষণ বা মেরামতের তেমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। দিন দিন সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। জনস্বার্থে দ্রুত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ পাকা সড়কটি মেরামতের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান জানান, জেলার মোকামতলা থেকে শুরু হয়ে সড়কটি সোনাতলা উপজেলা এবং সারিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদে শেষ হয়েছে। ৪০ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ২০ কিলোমিটার সড়কটি বেহাল হয়ে আছে। এর মধ্যে সোনাতলা উপজেলা অংশের ৭ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের বরাদ্দ পাওয়া গেছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই