ফরিদপুর জেলায় এ বছর রেকর্ড পরিমাণ জমিতে লাগানো হয়েছিল মুড়িকাটা পিয়াজ। ফলনও হয়েছে আশাতিত। বর্তমানে জেলার বিভিন্ন স্থানে কৃষাণীরা পিয়াজ তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল, চরমাধবদিয়া, ঈশান গোপালপুর, অম্বিকাপুর এবং নগরকান্দা-সালথা উপজেলার বিভিন্ন মাঠে মাঠে এখন মুড়িকাটা পিয়াজ তোলার ধুম পড়েছে। মাঠে মাঠে এখন কৃষানীদের ব্যস্ততা বেড়েছে। পুরুষের চেয়ে নারীরা পিয়াজ তুলতেই বেশী কাজ করছে।
নগরকান্দা উপজেলার কাইচাইল ইউনিয়নের কৃষানী রাবেয়া বেগম, সুফিয়া খাতুন, বরু খাতুন জানান, এ অঞ্চলে সবচে বেশী পিয়াজ আবাদ হয়ে থাকে। পিয়াজ লাগানো থেকে শুরু করে খেতে পানি দেওয়া ও আগাছা নিড়ানোর কাজও তারা করে থাকেন। বাড়ির পুরুষেরা অন্যান্য কাজে ব্যস্ত থাকায় পিয়াজ তোলার কাজটি তারাই করে থাকেন। তাছাড়া খেত থেকে পিয়াজ তোলার পর সেটির মাথা কেটে বাজারে নেবার জন্য প্রস্তুত তারাই করে থাকেন। পিয়াজ তোলা ও কাটার জন্য গ্রামের নারীরা টাকার বিনিময়ে এসব কাজ করে থাকেন। খেত থেকে পিয়াজ তোলার জন্য একজন নারী শ্রমিক পেয়ে থাকেন ২ থেকে ৩শ টাকা করে। এছাড়া অনেকেই পিয়ার তোলার পর টাকার পরিবর্তে পিয়াজ নিচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধুমাত্র নগরকান্দা ও সালথা উপজেলাতেই দুই-তিন হাজার নারী পিয়াজ তোলার কাজটি করছেন।
পিয়াজ আবাদে দেশের মধ্যে শীর্ষস্থান হচ্ছে ফরিদপুর। এই জেলায় উৎপাদিত পিয়াজ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এ বছর পিয়াজের ফলন ভালো হওয়ার পরও বর্তমানে বাজার দর দেখে কৃষকের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন ভারতসহ অন্যান্য পার্শবর্তী দেশ থেকে পিয়াজ আমদানী বন্ধ না করলে এ বছর লোকশানের মধ্যে পড়তে হবে তাদের। এ বছর ফরিদপুর জেলায় ৫ হাজার ১শত ৬০ হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পিয়াজ আবাদ করা হয়েছে। যা থেকে প্রায় ৭০ হাজার মেট্রিক টন পিয়াজ উৎপাদিত হবে। বাজারে বর্তমানে প্রতিকেজি মুড়িকাটা পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।
এদিকে, পিয়াজের ভরা মৌসুমে কৃষকেরা ন্যায্য দাম না পেলে পরবর্তী মৌসুমে পিয়াজের আবাদ কমে যাওয়ার শংকা রয়েছে বলে জানান কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ ড. মোঃ হযরত আলী। তিনি বলেন, গত বছর পিয়াজের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকেরা আগ্রহ নিয়ে পিয়াজের আবাদ করেছিল। তারা বেশি দামে পিয়াজের গুটি কিনে জমিতে লাগিয়েছিল। এবার দাম অস্বাভাবিক ভাবে কমে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়বে কৃষকেরা।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন