কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ছাড়া জৈব পদ্ধতিতে লাউ চাষ করে বাড়তি আয় করছেন কৃষক সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম। ‘সেক্স ফেরোমন’ পদ্ধতিতে পোকা দমন ও সারের পরিবর্তে জৈব উপায়ে নিরাপদ ও বিষমুক্ত লাউ আবাদ করছেন তিনি। চার মাসের মাথায় লাউ বিক্রি করে ইতিমধ্যে পুঁজির তিনগুণ মুনাফাও পেয়েছেন তিনি। ফলন অনুযায়ী এ ক্ষেত থেকে আরও চারগুণ আয়ের আশা রয়েছে তার।
সরেজমিন কৃষক সৈয়দ সিরাজুল ইসলামের গ্রাম সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার খাজান্সি ইউনিয়নের ইসলামাবাদে (প্রকাশিত ইসলামপুর) যাওয়া হয়। গিয়ে দেখা যায়, বসত বাড়ির পাশেই ফসলি জমিতে মাচায় চাষ করা লাউয়ের পরিচর্যা করছেন তিনি। স্থানীয় পাইকারি ক্রেতারা ক্ষেত থেকে লাউ কিনে নেয়ার পর, পরিষ্কার করছিলেন শুকনো পাতা ও গাছের শেকড়ের অংশ। পুরো ক্ষেত জুড়ে দুলছে বিভিন্ন আকারের লম্বা সবুজ সারি সারি লাউ। ডগায় ডগায় লাউয়ের কুঁড়ি ধরেছে থরে থরে।
তিনি জানান, একই জমিতে বছরে একবার ধান চাষ আর বাকী পুরো সময় লাউ চাষে বাড়তি আয় করেন। গেল ভাদ্র মাসে ১০ শতকের ওই জমিতে সারিবদ্ধ ভাবে ১৯৫টি লাউয়ের চারা রোপণ করেন তিনি। মাত্র ৪৫ দিনেই ফলন শুরু হয় লাউয়ের। মাত্র ৫ হাজার টাকা পুঁজির এ ক্ষেত থেকে ইতিমধ্যে চার মাসে বিক্রি করেছেন ২০ হাজার টাকার লাউ।
এভাবে একাধারে ৭ মাস পর্যন্ত বিক্রি করা যাবে লাউ। ফলন অব্যাহত থাকলে ৪০ হাজার টাকার লাউ বিক্রির আশাবাদী তিনি। এছাড়া কেবল লাউয়ের লতি বিক্রি হবে ১০-১৫ হাজার টাকার। এতে খরচ বাদে আয় হবে তার ৪৫ হাজার টাকা।
তিনি বলেন, সম্পূর্ণ বিষমুক্ত ও নিরাপদ সবজি এ লাউ। এতে কোন কীটনাশক ব্যবহার হয়নি। তাছাড়া লাউ চাষে কেবল ক্ষেত প্রস্তুত ও চারা রোপণ ছাড়া আর তেমন কোন পরিশ্রম করতে হয় না। অল্প পুঁজিতে লাউ চাষ করা সম্ভব।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমজান আলী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পরিবেশ বান্ধব কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারে ফসলের স্বাদ ও বাজার মূল্য যেমন বেড়ে যায়, তেমনি মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ প্রাকৃতিক পরিবেশ ও মানব স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়না। তাই বালাইনাশকের ব্যবহার কমাতে দিন দিন বিষমুক্ত ও পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে এবং এর প্রসারে কৃষি বিভাগ কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ প্রদান করে যাচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর