ইরানের রাজধানী তেহরানে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার ভবনে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। এই হামলার কারণে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সরাসরি সম্প্রচার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল কিছু সময়ের জন্য। তবে হামলার ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে আবার সম্প্রচারে ফিরে আসে চ্যানেলটি।
লাইভ সম্প্রচারের সময় উপস্থাপকের ভয়ে ক্যামেরার বাইরে সরে যাওয়ার দৃশ্য বিশ্ব গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দেয় ইসরায়েলে। দেশটির টিকটকে ওই উপস্থাপককে অনুকরণ করে ব্যঙ্গাত্মক ভিডিও বানানোর হিড়িক পড়ে যায়। ওইসব ভিডিওতে উপস্থাপিকার পোশাক ও আতঙ্কিত মুখভঙ্গি নকল করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই এই ট্রেন্ডকে ‘যুদ্ধাপরাধের নির্লজ্জ উৎসব’ বলে কড়া সমালোচনা করেছেন।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, “সত্যের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করতে ইসরায়েল এই বর্বর হামলা চালিয়েছে।” একাধিক কর্মী নিহত হয়েছেন বলেও ইরান দাবি করেছে। সম্প্রচারের সময় স্টুডিওতে ধ্বংসাবশেষ পড়ে ও কর্মীরা ক্যামেরার বাইরে ছুটে যান— এমন দৃশ্য ইতোমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে।
তেহরানের তৃতীয় জেলায় অবস্থিত এই টেলিভিশন ভবনটিকে ইসরায়েল ‘সামরিক যোগাযোগ কেন্দ্র’ বলে দাবি করেছে। হামলার আগে সাধারণ মানুষকে সরানোর জন্য ‘আগাম সতর্কতা’ দেওয়া হয়েছিল বলেও দাবি করেছে তারা। তবে ইরান একে সম্পূর্ণ বেসামরিক স্থাপনায় ‘যুদ্ধাপরাধমূলক হামলা’ বলে অভিহিত করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইসরায়েলি তরুণদের এই টিকটক ট্রেন্ড ‘লজ্জাজনক ও মানবিক মূল্যবোধ বিসর্জন দেওয়া’ একটি কাজ, যা চলমান যুদ্ধের নৃশংসতাকে আরও উস্কে দিচ্ছে।
এ বিষয়ে ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার প্রধান পেমান জেবেলি বলেছেন, “আমরা এবং আমাদের কর্মীরা শেষ পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকব।” রক্তমাখা কাগজ হাতে সম্প্রচারে এসে তিনি জানান, “এই হামলা আমাদের চুপ করাতে পারবে না।”
বিশ্বজুড়ে এ ঘটনার নিন্দা জানানো হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, সাংবাদিক ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোকে টার্গেট করা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের সামিল।
সূত্র: আলজাজিরা
বিডি প্রতিদিন/আশিক