বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, নতুন অবস্থানের আলোকে কমিটি গঠন কিংবা আধিপত্য বিস্তারসহ কোনো ধরনের সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা বরদাশত করা হবে না। যত বড় ত্যাগী নেতাই হোক না কেন, যতই মামলা কিংবা জেল-জুলুমের শিকার হোক না কেন, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকলে সাংগঠনিক ব্যবস্থার পাশাপাশি প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক কর্মশালায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে দলীয় এমন কঠোর অবস্থানের কথা জানান তারেক রহমান। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। নিয়মিত টকশোতে অংশগ্রহণকারী বিএনপি নেতা এবং দলপন্থি পেশাজীবী নেতাদের নিয়ে দলের মিডিয়া সেলের আয়োজনে গত সোমবার রাতে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
তারেক রহমান বলেন, বিএনপি আগামীতে জনগণের ভোটে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করলে গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আওয়ামী লীগের বিচারসহ তাদের আমলে দুর্নীতি, লুটপাট, টাকা পাচার, ভোট ডাকাতি, গুম-খুনের প্রতিটি ঘটনার বিচার করা হবে। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, বিএনপি আগামীতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসছে- এ আত্মতৃপ্তি নিয়ে বসে থাকলে চলবে না। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রাম এবং বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে আপনারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন, বক্তব্য-বিবৃতির মাধ্যমে জনগণের কাছে আপনারা কমিটমেন্ট করছেন, আপনাদেরই বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার করণীয় বের করতে হবে।
জানা গেছে, এ কর্মশালায় লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠকের পাশাপাশি দেশের সার্বিক পরিস্থিতি, অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা, সামনের চ্যালেঞ্জ ও শঙ্কাগুলো কী এবং এখান থেকে উত্তরণের উপায় কী, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বিএনপির প্রত্যাশা, সামনের নির্বাচনে জনগণের ভোটে বিজয়ী হয়ে তারা সরকার গঠন করবে। তাই একটি দিনও তারা নষ্ট করতে চায় না। সে অনুযায়ী আগামীতে ক্ষমতায় গেলে প্রথম ১৮০ দিনের অর্থনৈতিক কর্মপরিকল্পনা কী হবে, এরই মধ্যে তা ঘোষণা করেছে দলটি। এর মধ্যে বিএনপি সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে বিএনপি ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। তারেক রহমান এগুলো নিয়ে কাজ করছেন বলে কর্মশালায় জানান। কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. সুকোমল বড়ুয়া, যুগ্ম মহাসচিব ও মিডিয়া সেলের সদস্যসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় নেতা নিলোফার চৌধুরী মণি, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক ও মিডিয়া সেলের সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নি, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ও বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, সিনিয়র সাংবাদিক এম এ আজিজ প্রমুখ।