করোনা ভাইরাস ও লকডাউনের কারণে দেশের অনেক জেলায় এখন চলছে শ্রমিক সংকট। আগাম জাতের বোরো ও ইরি ধান কাটার মৌসুমে শ্রমিক সংকটে কুড়িগ্রাম থেকে প্রশাসনের সহায়তায় বাইরের জেলাগুলোতে প্রেরণ করা হচ্ছে কৃষি শ্রমিক। এতে ওইসব জেলার শ্রমিক সংকট মোকাবেলার পাশাপাশি এ জেলার অনেক শ্রমিক কাজের সন্ধান পেয়ে বেজায় খুশি।
প্রশাসনের ক্লিয়ারেন্সের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এসব শ্রমিককে পাঠানো হচ্ছে। কোভিড পরিস্থিতির এ লকডাউনে জেলার কর্মহীন মানুষগুলো জেলার বাইরে গিয়ে কাজের মাধ্যমে তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে খুবই খুশি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শনিবার পর্যন্ত এ জেলা থেকে ৮৪৯ জন শ্রমিক ধান কাটতে বাইরের জেলাগুলোতে প্রেরণ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। চলতি বছর বিরুপ আবহাওয়ার মধ্যেও মাঠে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। করোনা বিস্তারের কারণে দেশে লকডাউন ঘোষণা করায় বিপাকে পড়েন ওইসব কৃষি জমির মালিক। তবে সরকারের সহযোগিতার মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিম্নআয়ের শ্রমিকরা জেলার বাইরে গিয়ে পাচ্ছেন কাজের সুযোগ।
অপরদিকে জমির মালিকদের মধ্যে নেমে এসেছে স্বস্তি। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন বিভিন্ন শ্রমিককে বাইরে কাজে যেতে ইচ্ছুক শ্রমিকদের তালিকা করতে উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ওসি ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সমন্বয়ে টিম গঠন করে আইডি কার্ড ও ছাড়পত্রের মাধ্যমে শ্রমিক প্রেরণে কাজ করছে। এরফলে দারিদ্রপীড়িত ও কর্মহীন কুড়িগ্রাম জেলার কৃষি শ্রমিকদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে কাজের সুযোগ। বর্তমানে নিজ জেলা কুড়িগ্রামে মাত্র ৩ থেকে ৪ শ’ টাকা মজুরী দিয়ে সংসার চালানো কঠিন হওয়ায় বাইরের জেলায় একটু চরা দাম পাবেন এমন প্রত্যাশায় তাদের গমণ। বাইরের জেলায় গিয়ে শ্রম দিয়ে তারা গড়ে ৬ থেকে ৭শ’ টাকা আয় করতে পারবেন বলে জানান শ্রমিকরা। এ কারনে তারা দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলে ছুটছেন ধান কাটতে ।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে বোরো ধান কর্তণের জন্য কুড়িগ্রাম থেকে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কৃষি শ্রমিক পাঠানো হচ্ছে। আমরা এজন্য মাইকিং করে প্রচারণা চালাচ্ছি। তিনি শনিবার পর্যন্ত কুড়িগ্রাম থেকে ৮৪৯ জন শ্রমিক প্রেরণ করা হয়েছে এবং এটি চলমান পর্যায়ক্রমে আরো শ্রমিক প্রেরণ করা হবে বলে জানান।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল