ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৪০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও আহত হয়েছেন ৭৬ জন এবং নিখোঁজন রয়েছেন অনেকেই। এ ঘটনায় শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বরগুনার নৌবন্দরে অপেক্ষা করেও অনেক যাত্রীর খোঁজ পাননি স্বজনরা। এমনকী এ ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কেউ কেউ সন্ধান পাচ্ছেন না ওই লঞ্চে থাকা তাদের স্বজনদের।
ঢাকার একটি রুটির দোকানে কাজ করেন ৩০ বছরের যুবক কালু। বড় বোনের স্বামী প্রবাস থেকে মাত্র ক’দিন আগে এসেছেন। তার সঙ্গে দেখা করতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকার সদরঘাট থেকে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে কালু তার স্ত্রী, সন্তান, ভাই-বোন, ভাগ্নেসহ ১০ জনকে নিয়ে ওঠেন। পরে ভোররাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আহত হন কালু। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ঝালকাঠি ও পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন কালু তার সঙ্গে আসা স্বজনদের চিন্তায় কান্না করে যাচ্ছেন।
পরিবারের বাকি সদস্যরা কোথায় আছেন এখনো তিনি জানেন না। হাসপাতালের বেডে তার হৃদয়বিদারক আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে আশপাশের পরিবেশ। তার আত্মচিৎকারে ঘটনাস্থলে থাকা অনেকের চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে আসে। কালু বলেন, আমার বড় বোনের স্বামী কিছুদিন আগে বিদেশ থেকে বরগুনা এসেছে। তার সঙ্গে দেখা করতে আমার স্ত্রী, সন্তান, ভাই, ভাগ্নে, ছোট বোনসহ মোট ১০ জন ঢাকা থেকে বরগুনা আসছিলাম। হঠাৎ শুনতে পেলাম আগুন লেগেছে। এরপর ছুটাছুটি শুরু হলো। আগে বুঝতে পারলে সবাইকে নিয়ে পানিতে ঝাপ দিতাম। আমি এখানে অসুস্থ হয়ে পড়ে আছি। কাউকে খবর ও দিতে পারছি না। কারোর খোঁজও পাচ্ছি না।
উল্লেখ্য, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে প্রায় ৪০০ যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি সদরঘাট থেকে ছেড়ে যায়। চাঁদপুর ও বরিশাল টার্মিনালে লঞ্চটি থামে এবং যাত্রী ওঠানামা করেন। ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে পৌঁছলে রাত ৩টার দিকে এতে আগুন ধরে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক