ঝালকাঠিতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধদের চিকিৎসায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেলে যোগদান করেছেন ঢাকার ৭ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। গত শুক্রবার রাতে তারা বরিশাল এসে পৌঁছেন। শনিবার সকাল থেকে দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা সেবা শুরু করেন তারা। এই দলের নেতৃত্বে রয়েছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্র্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. নুরুল আলম। তার সহযোগী হিসেবে রয়েছেন একই ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. মাসরুর উর রহমান, রেজিস্ট্রার ডা. মোরশেদ কামাল, ফেস বি রেসিডেন্ট ডা. মৃদুল কান্তি সরকার, ডা. শাওন বিন রহমান এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. আল মোনতাসির বিল্লাহ ও ডা. ইসতিয়াক সুলতান।
হাসপাতালের পরিচালক কার্যালয় সূত্র জানায়, গত শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ ৮১ জনকে এ ঘটনায় শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে গুরুতর ১৯ জনকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। যার মথ্যে পথিমধ্যে একজন শিশু মারা যায়। গত ২৪ ঘণ্টায় চিকিৎসায় কিছুটা সুস্থ হয়ে ১৬ জন রোগী বাড়ি ফিরে গেছেন। সকাল পর্যন্ত শেবাচিমে চিকিৎসাধীন ছিলো ৪৬ জন দ্বগ্ধ রোগী। তাদের মধ্যে আশংকাজনক ৩ জন আইসিইউতে, হাত-পা ভেঙে যাওয়া ৫ জন অর্থপেডিক্স বিভাগে, ৫ জন শিশুসহ ৩৮ জন সার্জারি বিভাগের অধীনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঢাকা থেকে আগত চিকিৎসক দলের প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা. নুরুল আলম চিকিৎসাধীন রোগীদের পর্যবেক্ষণ শেষে বলেছেন, ‘যাদের প্রয়োজন তাদের আজই অপারেশন করার উদ্যোগ নেয়া হবে। অপারেশন থিয়েটার প্রস্তুত রাখতে হবে। এখানে প্লাস্টিক সার্জারিও করা সম্ভব। যাদের অপারেশন এখানে সম্ভব না তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হবে।’
শের-ই বাংলা মেডিকেলের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম জানান, ‘লঞ্চে অগ্নিদ্বগ্ধদের চিকিৎসায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে ৫ জন এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে ২ জন চিকিৎসক বরিশাল এসেছেন। তারা চিকিৎসা সেবা শুরু করেছেন। তাদের সব ধরনের সহায়তা দেয়া হচ্ছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা আসায় দগ্ধ রোগীদের উন্নত মানের চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হচ্ছে।’
এদিকে ওই অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪১-এ পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া।
সকালে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে পরিচয়হীন ২৭ জনের মরদেহ বরগুনার পোটকাখালী গণকবরে দাফন করা হয়। এছাড়া পরিচয় শনাক্ত হওয়া ১০ জনের মরদেহ নিজ নিজ স্বজনরা নিয়ে বাড়িতে দাফন করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা