বরিশাল নগরীর একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই শিশু শিক্ষার্থীকে শ্রেণিকক্ষে রেখে স্কুল ভবন তালাবদ্ধ করে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনা যেন আশির দশকের ছায়াছবি ‘ছুটির ঘণ্টার’ প্রতিফলন হলো। বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় চলছে বরিশালে। অভিভাবকদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে আতংকের। এ ঘটনায় শ্রেণি শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত এবং প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিয়েছে শিক্ষা অধিদপ্তর।
বরিশাল নগরীর নবগ্রাম রোডের ৮ নম্বর ইন্দ্রকাঠি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার বিকেলে দুই শিশু শিক্ষার্থী মুনমুন ও ফারজানকে শ্রেণি কক্ষে অংশ কষতে দিয়ে অফিস কক্ষে চলে যান শ্রেণি শিক্ষক ৫ মাসের অন্তঃস্বত্তা মাকসুদা বেগম। তিনি ক্লাশে ফিরে না আসায় দীর্ঘক্ষন পর তারা কক্ষ থেকে বের হয়ে দেখতে পায় স্কুলের গেটে তালা।
শিশু মুনমুন ও ফারজান জানায়, ক্লাশ কক্ষ থেকে বের হয়ে কাউকে না দেখে এবং গেটে তালা দেখে তারা খুব ভয় পেয়েছিলেন। পরে ডাক চিৎকার শুরু করেন তারা। বিষয়টি টের পেয়ে তাদের উদ্ধার করে আশপাশের বাসিন্দারা। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন। ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর নজরদারী দাবী করেন তারা।
বিষয়টি ইচ্ছাকৃত নয়, অনিচ্ছাকৃত ভুল বলে দুঃখ প্রকাশ করেন অভিযুক্ত শ্রেণি শিক্ষক মাকসুদা বেগম। এ ঘটনায় তিনি সকলের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক তানিয়া সুলতানা জানান, ওইদিন বিকেল সোয়া ৪ টায় গেট তালাবদ্ধ করেন তারা। প্রতিবেশীদের ফোন পেয়ে ২০ মিনিটের মধ্যেই চাবি নিয়ে গেট খুলতে যান তারা। এ সময় গেট খুলতে স্থানীয়রা বাঁধা দেয়। স্কুল পরিচালনা কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বে জের ধরে পুলিশ এবং সাংবাদিকদের দিয়ে শিক্ষকদের হেনেস্তা করার অপচেষ্টা চলছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেন তিনি।
এদিকে শিক্ষার্থী ক্লাশ রুমে রেখে বিদ্যালয় তালাবদ্ধ করার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে শ্রেণি শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত এবং প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ মজুমদার।
ওই স্কুলে শিক্ষার্থী রয়েছে ২৫১ জন। শিক্ষকের ৯টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৪ জন। অফিস সহায়ক রয়েছে একজন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল