১৮ বাংলাদেশি জেলেকে দুই দিনেও ফেরত দেয়নি মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি)। এ নিয়ে উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন ওই জেলেদের পরিবার।
এর আগে মঙ্গলবার বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ ধরে ফেরার পথে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-পথের নাইক্ষ্যংদিয়া থেকে তাদের অস্ত্রের মুখে ধরে নিয়ে যায় বিজিপির সদস্যরা।
টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার জানান, এ ঘটনায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জেলেদের ফেরত চেয়ে যোগাযোগ করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার বিকালে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী জেলে পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি তাদের খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য শাহপরীরদ্বীপ জালিয়াপাড়া যান। খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী ও কিছু অর্থ সহায়তা দেন উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
জেলেদের ফেরত নিয়ে আসার বিষয়ে পরিবারগুলোকে আশ্বস্ত করেন ইউএনও।
শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়ায় জেলে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। বাড়িতে বিলাপ করছিলেন মো. ইসমাইরের মা ফাতেমা বেগম। শুধু তিনি নন, অন্য পরিবারগুলোরও একই অবস্থা।
ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেদের ফেরতে স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তাদের পরিবারগুলো।
আটক জেলেরা হলেন মো. জসীম (২৫), সাইফুল ইসলাম (২৩), মো. ফায়সেল (২৩), আবু তাহের (২২), মো. ইসমাইল (২০), মো. ইসহাক (২৪), আব্দুর রহমান (২৪), নুর কালাম (২৬), মো. হোসেন (২২), হাসমত (২৫), মো. আকবর (২৩), নজীম উল্লাহ (১৯), রফিক (২০), সাব্বির (২৫), মো. হেলাল (২৫), রেজাউল করিম (১৮), রমজান (১৬) ও জামাল (২১)। তারা সবাই টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা।
সাবরাং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুস ছালাম বলেন, ধরে নিয়ে যাওয়া ১৮ জেলে কোথায়, কীভাবে আছেন, তা জানে না পরিবারগুলো। তাই এলাকাজুড়ে চলছে বিলাপ। তাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
শাহপরীরদ্বীপ জালিয়াপাড়া ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুল গনি বলেন, ধরে নিয়ে যাওয়া ১৮ জেলের সকলেই বাংলাদেশের বাসিন্দা। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ কোথায় ধরে নিয়ে গেছে সেটা সুনির্দিষ্টভাবে জানতে না পারায় পরিবারগুলোর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার বলেন, ‘জেলে ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় মিয়ানমার বিজিপির সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। প্রথমে কোনো ধরনের সাড়া না দিলেও পরবর্তীতে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে। দ্রুত জেলেদের ফেরত দিতে তাগিদ দেওয়া হচ্ছে।’
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ