২২ মে, ২০২২ ১৯:১৭

কুষ্টিয়ায় মাছ ব্যবসায়ী হত্যায় তিন জনের যাবজ্জীবন

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ায় মাছ ব্যবসায়ী হত্যায় তিন জনের যাবজ্জীবন

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার দহকুলা গ্রামের শহিদুল ইসলাম নামে এক মাছ ব্যবসায়ীকে অপহরণ, হত্যাসহ লাশ গুমের ঘটনায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ অর্থ দণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।

রবিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ অতিরিক্ত আদালত-১ এর বিচারক তাজুল ইসলাম এই রায় দেন।

আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের অনুপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করা হয়।

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, সদর উপজেলার দহকুলা নওয়াপাড়া গ্রামের ইয়ার আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম ওরফে শহীদ মেম্বার, একই এলাকার ওমর আলীর ছেলে মো. চান্নু এবং মজিবর রহমানের ছেলে বক্কার ওরফে বক্কর। রায় ঘোষণার সময় সাজাপ্রাপ্ত তিন আসামি পলাতক ছিলেন।

সেই সাথে এই মামলার চার্জশিটভুক্ত অপর তিন আসামি মাহাতাব বিশ্বাস, শওকত বিশ্বাস এবং মো. সেলিমের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালের ৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় স্থানীয় কয়েকজন সদর উপজেলার দহকুলা নওয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ইনতাজ আলীর ছেলে মাছ ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম শহিদকে (৪২) বাড়ি থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে আর শহিদুলের আর সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ঘটনার ৪ বছর পর ২০১০ সালে ১৯ মার্চে দহকুলা গ্রামের জনৈক মসলেম উদ্দিনের পান বরজ সংলগ্ন পরিত্যক্ত কুয়ার মধ্য হতে মৃতদেহের হার ও পরিধেয় কাপড় উদ্ধার করে পুলিশ। পরে নিহত শহিদুলের পরিবার উদ্ধারকৃত কাপড় দেখে শহিদুলের লাশ বলে শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মোছা. মর্জিনা বেগম (৩৫) বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখসহ কুষ্টিয়া সদর থানার অপহরণ হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগে মামলা করেন।

বাদী তার এজাহারে উল্লেখ করেন, ‘পুলিশ-র‌্যাবকে তথ্য দিয়ে অপরাধীদের ধরিয়ে দেয়ার কাজে জড়িত বলে মিথ্যা ও মনগড়া সন্দেহ করে এজাহারভুক্ত সন্ত্রাসীরা আমার স্বামী শহিদুল ইসলামকে ধরে নিয়ে গিয়ে খুন করে লাশ গুম করেছিল। মামলার তদন্ত শেষ করতে ৪ বছর অতিবাহিত করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। ২০১৪ সালের ৭ মে ৬ জনের বিরুদ্ধে অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ এনে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তৎকালীন কুষ্টিয়া সদর থানার উপপুলিশ পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক মিয়া।

কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি এড. অনুপ কুমার নন্দী জানান, পুলিশের দেয়া তদন্ত প্রতিবেদনে বিজ্ঞ আদালত দীর্ঘ স্বাক্ষ্য শুনানি শেষে রায় ঘোষণার দিন পলাতক তিন আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। এ জন্য আদালত তাদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডসহ প্রত্যেকের পৃথক ভাবে ২৫ হাজার টাকা করে অর্থ দণ্ডাদেশ অনাদায়ে আরও এক বছরের সাজার দণ্ডাদেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। সেই সাথে চার্জশিটভুক্ত অপর তিন আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন। 

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর