বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় উম্মে সালমা খাতুন (৫০)। তারই ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমান (১৯) হত্যা করে মায়ের লাশ ডিপ ফ্রিজে রেখে দেয়। পরে কুড়াল দিয়ে আলমারি কুপিয়ে ডাকাতির চেষ্টা বলে সাজিয়ে তালা দিয়ে বের হয়ে যায়। এ ঘটনায় সাদ বিন আজিজুর রহমানকে র্যাব-১২ সদস্যরা গ্রেফতার করে।
জানা গেছে, সাদ বিন আজিজুর রহমান তার হাত খরচের টাকা নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের কারণে নিজের মাকে শ্বাসরোধে খুন করে। এরআগে গত ১০ নভেম্বর দুপুরে বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় উপজেলার আজিজয়া মঞ্জিল নামের বাড়িতে ওই গৃহবধূকে হত্যার পর তার লাশ ডিপ ফ্রিজে রাখা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। গ্রেফতার সাদ বিন আজিজুর রহমান দুপচাঁচিয়া ডিএস কামিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ, উপজেলা ঈমাম-মোয়াজ্জিম সমিতির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের পেশ ঈমাম মাওলানা এসএম আজিজুর রহমানের ছেলে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে র্যাব-১২ বগুড়ার কোম্পানি কমান্ডার মেজর এহতেশামুল হক খান এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই হত্যাকাণ্ডের তথ্য জানান। তিনি আরও জানান, ছেলে সাদের সাথে তার মা উম্মে সালমার হাত খরচের টাকা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। সে বাড়ি থেকে প্রতিদিন ৫শ’ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত হাত খরচ নিতো। ঘটনার দিনও বিষয়টি নিয়ে তার মায়ের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এতে সে রাগ করে না খেয়ে মাদ্রাসায় চলে যায়। সকাল ১১টায় ক্লাসের বিরতিতে সে বাড়ি ফিরে আসে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তার মাকে রান্না ঘরে পিছন দিক থেকে নাক-মুখ চেপে ধরে শ্বাসরোধে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর তার দু’হাত ওড়না দিয়ে বেঁধে বাসার ডিপ ফ্রিজে রেখে ডাকাতির ঘটনা সাজানোর জন্য আলমারিতে কুড়াল দিয়ে আঘাত করে। পরে মেইন গেটে তালা দিয়ে বের হয়ে যায়। এরপর আবারও সে বাড়িতে এসে তার মাকে পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে তার বাবাসহ অন্যদের ফোন দেয়। পরে তার বাবা মাওলানা আজিজুর রহমান বাড়িতে এসে ডিপ ফ্রিজ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, হত্যার ঘটনার পরপরই তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করা হয়। নিহতের ছোট ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সাদ তার মাকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেন এবং ঘটনাটি ডাকাতি হিসেবে চালানোর চেষ্টা করেন। মঙ্গলবার দুপুরে আসামী সাদ বিন আজিজুর রহমানকে দুপচাঁচিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ