নাট্যাঙ্গনের দাপুটে ও জনপ্রিয় অভিনেত্রী আফরোজা বানু। শুধু মঞ্চ আর ছোট পর্দায়ই নয়, চলচ্চিত্রেও তার উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। সম্প্রতি এই গুণী অভিনেত্রীর সঙ্গে তার অভিনয় জীবন ও সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল
অভিনয় জীবনের শুরুর দিক সম্পর্কে জানতে চাই...
এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পরপরই বেতার নাটকে অভিনয় এবং উপস্থাপনার কাজ শুরু করি। এরপর স্কুল জীবনে এসে অভিনয়ে অনুপ্রেরণা পাই ফেরদৌসী মজুমদারের সাহচর্যে। রেডিওতে কাজ করার সুবাদে জ্যেষ্ঠ শিল্পী হিসেবে তিনিও আসতেন। তারই নির্দেশনায় এবং মমতাজ উদ্দীন আহমদের নাট্যরূপে রবিঠাকুরের ‘দুই বোন’ মঞ্চ নাটকে প্রথম অভিনয় করি। তার মাধ্যমে ‘থিয়েটার’র সঙ্গে সম্পৃক্ত হই। ‘থিয়েটার’ ভাগাভাগি হলে ‘থিয়েটার আরামবাগ’ নামে আমরা কাজ শুরু করলেও আমি কিন্তু এখনো ‘থিয়েটার’ নামই বলতে ভালোবাসি।
বিটিভিযুগীয় আফরোজা বানু এখনো সবার মুখে মুখে ফিরে...
অভিনেত্রী হিসেবে আমার দর্শকপ্রিয়তা এবং তারকাখ্যাতি যেটাই বলেন না কেন আসে বেগম মমতাজ হোসেনের রচনায় ও রহমতুল্লাহর প্রযোজনায় ‘সকাল-সন্ধ্যা’ ধারাবাহিক নাটকের মাধ্যমে। সে সময় আমার ‘শিমু’ চরিত্রটি সবার ভালো লেগেছিল।
সেকালের জুটির মতো এখনো তেমন কোনো জুটি গড়ে উঠেনি...
হা হা... আমি তো রিসার্চ করিনি। তবে খোলা দৃষ্টিতে মনে হয়, তখন বিটিভি নামে একটাই চ্যানেল ছিল। তাই সবাই একটা চ্যানেলই দেখত। এখন ২৬টা চ্যানেল, তাই দর্শক ভাগ হয়ে গেছে। তাই কোন জুটি জনপ্রিয় তা নিরূপণ করা খুবই দুরূহ কাজ। তবে আমার মতে নতুন নতুন ছেলেমেয়েরা অনেক ভালো করছে।
নাটকে বর্তমান ব্যস্ততা...
পারিবারিক কাজে অনেক দিন ব্যস্ত থাকাতে খুব বেশি কাজ করা হয়নি। অন্যদিকে অসুস্থও ছিলাম। তবে এ পর্যন্ত তিনটি কাজ করছি। রহমতুল্লাহ তুহিনের ‘যখন কখনো’। এটি প্রচার হচ্ছে। এ ছাড়াও জুয়েল মাহমুদের ‘ওয়ানওয়ে’সহ আরেকটি সিরিয়ালে কাজ করছি। নতুন সিরিয়ালটির ১৫ তারিখ থেকে শুটিং হবে।
অভিনয়শিল্পী সংঘের কার্যক্রমের ব্যাপারে আপনার অভিমত?
তেমন করে সম্পৃক্ত নই। কেমন কাজ হচ্ছে তা একটু কম জানি। তবে আমি সংগঠনের ব্যাপারে পজেটিভ। একটা সংগঠনের সফলতা অনেক সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। আমার জানা মতে অভিনয়শিল্পী সংঘ সর্বদা শিল্পীদের পাশে থাকছে। ১২ তারিখ অভিনয়শিল্পী সংঘের সাধারণ সভা ও মিলনমেলায় যাব। তারা প্রতিবেদন দেবে, পরবর্তী কর্ম পরিকল্পনা শেয়ার করবে। আমি ব্যক্তি নিয়ে বলব না, সংগঠনের কাজের ব্যাপারেই সেদিন বলব।
চলচ্চিত্রে আপনাকে কিন্তু খুবই কম দেখা যায়...
নিয়মিত কাজ করা হয় না; বরাবরই অনিয়মিত কাজ করেছি। নিজেদের মধ্যে কাজ হলে তারা আমায় বোঝে। তবুও এ পর্যন্ত অভিনয় করেছি ‘অধিকার চাই’, ‘নন্দিত নরকে’, ‘দারুচিনি দ্বীপ’ ‘এইতো প্রেম’, ‘মা’, ‘গহীন বালুচর’ প্রভৃতি চলচ্চিত্রে।
আপনি চলচ্চিত্রের নায়িকা হওয়ার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন...
যখন টেলিভিশনে কাজ করি তখনই প্রস্তাব আসে। তবে তখন করা হয়ে উঠেনি। পরবর্তীতে এক সময় মনে হলো থিয়েটার, টিভি, বিজ্ঞাপনে যখন কাজ করছি তখন চলচ্চিত্রে কেন নয়! কিন্তু এখন সেই বয়স নেই। তাই মাঝে মাঝে মায়ের চরিত্রে কাজ করি। আর আমি অভিনয় নিয়েই থাকতে চাই, নির্মাণে আগ্রহ নেই।