বুধবার, ১৯ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

অ্যাসিড নিক্ষেপ দুই গৃহবধূকে

প্রতিদিন ডেস্ক

নড়াইলে পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে গৃহবধূর ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্বামীর অ্যাসিড নিক্ষেপে ঝলসে গেছে স্ত্রীর মুখ। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

নড়াইল : নড়াইল সদর উপজেলার বাহিরগ্রামে পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে তানিয়া বেগম (২৭) নামে এক গৃহবধূর ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। তানিয়া বাহিরগ্রামের গোলাপ মোল্যার মেয়ে। এ ঘটনায় তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

পুলিশ ও অ্যাসিডদগ্ধ তানিয়ার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, এক বছর আগে বাহিরগ্রামের প্রতিবেশী মৃত মোস্তফার ছেলে জুয়েল ব্যবসা করার জন্য তানিয়ার কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা ধার নেন। তানিয়া তার পাওনা টাকা ফেরত চাইলে জুয়েল নানা টালবাহানা শুরু করে এবং বিভিন্ন সময় অ্যাসিড মেরে তানিয়াকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। হুমকির কারণে নিরাপত্তার অভাবে তানিয়া গত ১৩ আগস্ট নড়াইল সদর থানায় একটি জিডি (সাধারণ ডায়েরি) দায়ের করেন এবং যশোর শহরের শঙ্করপাশায় তার স্বামী মাসুদ হাসানের বাড়ি চলে যান। স্থানীয়ভাবে শালিসের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসার কথা বললে সোমবার তানিয়া তার বাবার বাড়িতে আসেন। ওইদিন রাতে সাধারণ ডায়েরির কপি দেখানোর জন্য তানিয়া তার বাবার বাড়ি থেকে পাশে চাচার বাড়িতে যাওয়ার সময় দেনাদার জুয়েল ও তার সহযোগী অহিদুর তানিয়ার ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। নড়াইল সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মশিউর রহমান বাবু জানান, অ্যাসিডদগ্ধ  তানিয়াকে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তানিয়ার পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান পুড়ে গেছে। নড়াইলের পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন জানান, গৃহবধূ তানিয়ার ওপর অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে জুয়েল ও তার সহযোগী অহিদুরসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ : চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে স্বামীর অ্যাসিড নিক্ষেপে স্ত্রী বেবী বেগমের (৪) মুখ ঝলসে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের দিয়াড় খলসী নতুনটোলা গ্রামে। অভিযুক্ত স্বামী হচ্ছেন একই গ্রামের মৃত ওমর আলীর ছেলে ঘরজামাই নওশাদ আলী (৬১)। মৃত আরজেদ আলীর মেয়ে বেবী বেগম হচ্ছেন নওশাদ আলীর ৪র্থ স্ত্রী। আক্রান্ত বেবী বেগম জানান, প্রতিদিনের মতো গত রবিবার দিবাগত রাতে তার ঘরে স্বামী-স্ত্রী পৃথক বিছানায় ঘুমিয়ে ছিল। রাত আনুমানিক ১টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় হঠাৎ তার মুখমন্ডল জ্বালাপোড়া শুরু করলে সে চিৎকার করে ঘরের বাইরে আসার চেষ্টা করে। ওই সময় তার স্বামী নওশাদ আলীকে কাচের বোতল হাতে তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখতে পায়। বেবী বেগমের চিৎকারে তার স্বজনরা উপস্থিত হলে নওশাদ আলী পালিয়ে যায়। পরে আহত বেবীর স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে নাচোল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। বেবী বেগম আরও জানান, প্রায় ২২ বছর আগে নওশাদ আলীর সঙ্গে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়। স্বামী নওশাদ আলী বেবীর পিতার বাড়িতেই বসবাস করত। কিন্তু স্বামী সাংসারিক কাজকর্ম না করায় প্রায়ই পারিবারিক অশান্তি লেগেই থাকত। এ ঘটনায় বেবী বেগমের ভাই নাচোল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ ব্যাপারে নাচোল থানার অফিসার ইনচার্জ সেলিম রেজা জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর