বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

সাগর-রুনির তদন্ত প্রতিবেদন পেছাল ৭৮ বার

আদালত প্রতিবেদক

সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আগামী ১১ মার্চ দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। গতকাল তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য থাকলেও তদন্ত কর্মকর্তা তা আদালতে দাখিল না করায় ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারী নতুন দিন ধার্য করেন। এ নিয়ে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য ৭৮ বার সময় পেছানো  হলো।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি দম্পতি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় খুন হন। প্রথমে মামলাটি তদন্ত করে থানা পুলিশ। চার দিন পর চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। দুই মাসের বেশি সময় তদন্ত করে ডিবি রহস্য উদ্ঘাটনে ব্যর্থ হয়। পরে হাই কোর্টের নির্দেশে ওই বছরের ১৮ এপ্রিল হত্যা মামলাটির তদন্তভার র‌্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সব মিলিয়ে এ মামলায় আট সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়।

 তারা হলেন- রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মো. সাইদ, মিন্টু, কামরুল হাসান ওরফে অরুণ, সাগর-রুনির ভাড়া বাসার নিরাপত্তাপ্রহরী এনামুল, পলাশ রুদ্র পাল এবং নিহত দম্পতির বন্ধু তানভীর রহমান। এদের মধ্যে প্রথম পাঁচজন ও নিরাপত্তাপ্রহরী এনামুল এখনো এ মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। বাকি দুজন আছেন জামিনে। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনির ক্ষতবিক্ষত লাশ পাওয়া যায়। সাগর তখন মাছরাঙা টিভিতে আর রুনি এটিএন বাংলায় কর্মরত ছিলেন। হত্যাকান্ডের সময় বাসায় ছিল তাদের সাড়ে চার বছরের ছেলে মাহির সরোয়ার মেঘ। এ হত্যা ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে এসে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করা হবে। ওই বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েই মহীউদ্দীন খান আলমগীর ১০ অক্টোবরের মধ্যে সাগর-রুনির হত্যারহস্য উদ্ঘাটিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন। এরপর ৯ অক্টোবর ‘চমক দেওয়া’ সংবাদ সম্মেলনে একজনকে ধরতে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন তিনি। পরে সেই ব্যক্তিকে ধরেও মামলার কোনো সুরাহা হয়নি। সাগর-রুনি হত্যাকান্ডের পর প্রথমে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ এবং পরে ডিবি এ মামলার তদন্তভার পায়। তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার ৬২ দিনের মাথায় (২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল) হাই কোর্টে ব্যর্থতা স্বীকার করে ডিবি। এরপর আদালত র‌্যাবকে মামলার তদন্তের নির্দেশ দেয়। সেই থেকে র‌্যাব মামলাটি তদন্ত করছে। তদন্তভার পেয়েই ভিসেরা পরীক্ষার জন্য কবর থেকে সাগর-রুনির লাশ উত্তোলন করে র‌্যাব। র‌্যাবের কর্মকর্তারা জানান, ভিসেরা পরীক্ষার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তাদের মৃত্যুর আগে কোনো প্রকার বিষাক্ত বা নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করানো হয়নি। আর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছুরিকাঘাতে রক্তক্ষরণ ও আঘাতের কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে। ২০১৫ সালের ৭ জুন আদালতে দেওয়া অগ্রগতি প্রতিবেদনে র‌্যাব জানায়, ঘটনাস্থল থেকে জব্দ করা আলামত যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়ে ফরেনসিক ও রাসায়নিক পরীক্ষার পর সেখান থেকে দুজন অজ্ঞাত পুরুষের পূর্ণাঙ্গ ডিএনএ বৃত্তান্ত পাওয়া গেছে।

সর্বশেষ খবর