শনিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

ঝরে পড়া রোধে শিক্ষায় মেগা প্রকল্প নিতে হবে

-সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঝরে পড়া রোধে শিক্ষায় মেগা প্রকল্প নিতে হবে

বাংলাদেশের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, কথাসাহিত্যিক ও সাহিত্যসমালোচক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেছেন, করোনাকালে অনেক শিক্ষার্থীই অর্থনৈতিক কারণে, অভাব-অনটনে পড়ে পড়াশোনা বাদ দিয়েছে। প্রান্তিক পর্যায়ে যারা বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে বা শিশুশ্রমে জড়িত হয়েছে, তাদের ফিরিয়ে আনা কঠিন কাজ। তবে ঝরে পড়া এসব শিক্ষার্থীর জন্য একটি মেগা প্রকল্প নেওয়া উচিত। যে খাতে বিনিয়োগের সুফল মিলবেই।

গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে মুঠোফোনে আলাপচারিতায় তিনি এ কথা বলেন। শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, আমরা তো অনেক সেক্টরেই মেগা প্রকল্প নেই। সব মেগা প্রকল্পের তাৎক্ষণিকভাবে ফল পাওয়া যায় না। কিন্তু শিক্ষায় যদি একটি মেগা প্রকল্প নেওয়া যায়, তার ফল আমরা পেতেই থাকব। এ খাতে বিনিয়োগ করলে ঝরে পড়া অনেক শিক্ষার্থীকে আমরা ক্লাসে ফেরত নিতে পারব। কিন্তু বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থী আশঙ্কাজনকভাবে ঝরে পড়লে এর একটি নেতিবাচক প্রভাব শুধু অর্থনীতিতেই নয়, সমাজেও পড়বে। ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের পরিবারগুলোকে একটু সহায়তা, শিক্ষার্থীদের বৃত্তির আওতায় নিয়ে আসতে পারলে-দুই তিন বছরের মধ্যেই এর ব্যাপক সুফল পাওয়া যাবে। শিক্ষার্থীরাও মূল ধারায় ফিরে আসবে।

কথাসাহিত্যিক মনজুরুল ইসলাম বলেন, যেসব ছাত্রীর বাল্যবিয়ে হয়েছে তাদের ফিরিয়ে আনা কঠিন কাজ। তবে যেসব শিক্ষার্থী শিশুশ্রমে আছে তাদের আমরা ফিরিয়ে আনতে পারি। তবে যেসব এনজিও শিক্ষা নিয়ে কাজ করছে বিশেষ করে ব্র্যাকের মতো এনজিও সরকারের সহযোগিতা নিয়ে বাল্যবিয়ের কারণে ঝরে পড়াদের নিয়ে কাজ করতে পারে। তাদের পরিবার বা শিশুর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে আলাপ করে মূল ধারায় ফিরিয়ে আনা যেতে পারে। তিনি বলেন, এখন আমাদের অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থাটাকে অব্যাহত রাখতে হবে। শিক্ষার্থীদের হাতে ল্যাপটপ দেওয়া ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান-সবই মেগা প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। যাদের এসব কেনার সামর্থ্য নেই তারা এক ধরনের বৈষম্যের শিকার। এটি জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক। এই শ্রেণি ডিজিটাল বৈষম্যের শিকার। এ বিষয়টা মাথায় রেখেই আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। শিক্ষার্থীরা যদি এভাবে ঝরে পড়তে থাকে তাহলে বিরাট একটি অংশ মাদকে জড়িত হবে। কিশোর গ্যাং বেড়ে যাবে। সমাজে অপরাধ বাড়বে।

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আরও বলেন, ঝরে পড়া শিক্ষার্থীরা চোখের বাইরে চলে গেলে নিজেরাও যেমন ক্ষতির সম্মুখীন হবে সমাজকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তাই এদের মূল ধারার শিক্ষায় ফিরিয়ে আনতে বিনিয়োগ করতে হবে। এসএসসি বা এইচএসসিতে কারা ফরম ফিলাপ করতে পারেনি, এটি জানা কঠিন কাজ নয়। সরকারের সহযোগিতা নিয়ে ব্র্যাকের মতো বেসরকারি পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করতে পারলে অনেকাংশে ঝরে পড়াদের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনা যাবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর