বুধবার, ১১ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

নিউমার্কেটে সংঘর্ষ সূত্রপাত করা দুজন গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষের ঘটনায় আরও দুজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, কাওসার হোসেন ও বাবু হোসেন। এরা নিউমার্কেটের ক্যাপিটাল ফাস্ট ফুডের দোকান কর্মচারী। গতকাল রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে গোয়েন্দা রমনা বিভাগের ধানমন্ডি জোনাল টিম। ডিবি রমনা বিভাগের ডিসি এইচ এম আজিমুল হকের নির্দেশনায় এবং এডিসি জুয়েল রানার তত্ত্বাবধানে অভিযানে নেতৃত্ব দেন ধানমন্ডি জোনাল টিমের এডিসি মো. ফজলে এলাহী। গতকাল পর্যন্ত আলোচিত এ ঘটনায় মোট ১১ জন গ্রেফতার হলো। অন্যদিকে, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে দোকানকর্মী মো. মেহেদী হাসান বাপ্পি অপরাধ স্বীকার করে পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার মামলায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

গতকালের দুজন গ্রেফতারের বিষয়ে এডিসি ফজলে এলাহী জানান, গত ১৮ এপ্রিল রাতে নিউমার্কেটের ওয়েলকাম ফাস্টফুডের কর্মচারী বাপ্পির সঙ্গে ক্যাপিটাল ফাস্টফুডের কাওসার ও বাবুর ফুটপাথে ইফতার সামগ্রীর টেবিল পাতা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হলে ওয়েলকাম ফাষ্টফুডের বাপ্পি ঢাকা কলেজের কয়েকজন ছাত্রকে ডেকে এনে ক্যাপিটাল ফাষ্টফুডের কর্মচারীদের মারধর করে। পরে এটি ঢাকা কলেজ ও নিউমার্কেট দোকানদারদের মধ্যে সংঘর্ষে রূপ নেয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও পরদিন সকাল থেকে দফায় দফায় আবারও সংঘর্ষ চলে। এতে নাহিদ ও মুরসালিন নামের দুই যুবক নিহত হন।

চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা সম্পর্কে পুলিশী তদন্তে গতকাল পর্যন্ত উঠে এসেছে, গত ১৮ এপ্রিল বিকাল ৫ টার দিকে নিউমার্কেটের ওয়েলকাম ফাষ্টফুড এর বাপ্পি ও ক্যাপিটাল ফাষ্টফুডের কাওসার ও বাবুর সঙ্গে ইফতারের টেবিল পাতা নিয়ে হাতাহাতি থেকে ঘটনার সূত্রপাত হয়। এরপর সন্ধ্যার দিকে তাদের একজন ঢাকা কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ডেকে এনে ফের মারামারিতে লিপ্ত হয়।  ওই ঘটনার জের ধরে সেদিন গভীর রাত পর্যন্ত ব্যবসায়ী ও ছাত্রদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীসহ অনেক ব্যবসায়ীও আহত হন। পরদিন সকাল থেকে দিনভর ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী ও নিউমার্কেট ব্যবসায়ী হকারদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষ চলাকালীন ইটের আঘাতে চন্দ্রিমা মার্কেটের সামনে লুটিয়ে পড়েন কুরিয়ার সার্ভিস কর্মী নাহিদ হাসান। এ সময় তাকে রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান সিয়াম। নাহিদকে সিয়াম আঘাত করার পর ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপান আরেক শিক্ষার্থী ইমন।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানিয়েছে, দুই দোকানের কর্মীদের মারামারিকে কেন্দ্র করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল কৌশলে গুজব ছড়িয়ে ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তথ্য ও কন্টেন্ট ছড়িয়ে ইন্ধন দেওয়ায় ওই ঘটনা চরম সহিংসতায় রূপ নেয়।

বাপ্পীর স্বীকারোক্তি : দোকানকর্মী মো. মেহেদী হাসান বাপ্পি পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় স্বেচ্ছায় আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তিন দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল সকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক হালদার অর্পিত ঠাকুর তার জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। দুপুরে ঢাকা মহানগর হাকিম নুুরুল হুদা চৌধুরীর আদালতে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। জবানবন্দি রেকর্ড করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর