সোমবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

আরপিও সংশোধন নিয়ে অনন্তকাল পার্স্যু করব না : সিইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

আরপিও সংশোধন নিয়ে অনন্তকাল পার্স্যু করব না : সিইসি

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধন প্রস্তাব নিয়ে সাড়ে তিন মাসেও আইন মন্ত্রণালয়ের কোনো সাড়া না পাওয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, অনন্তকাল ধরে পার্স্যু করব না। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

এদিকে আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আরপিও সংশোধনীর অগ্রগতি জানাতে গতকাল আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ ছাড়া সময়মতো সাড়া না পেলে নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা, স্বাধীনতা ও সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে ‘জনমনে সংশয় তৈরি হতে পারে’ বলেও সতর্ক করেছে ইসি। গতকাল সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা যেহেতু সময় বেঁধে দিয়েছি, ওই সময়ের মধ্যে নিশ্চয়ই তারা রেসপন্স করবেন। দেরি হয়েছে সরকারের বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে হয় সময় করে উঠতে পারেনি। এ জন্য সময় দিয়েছি একটা। আমরাও তো অনন্ত কাল ধরে একটা ম্যাটার পার্স্যু করতে পারি না। এ জন্য বিষয়টা আমরা শেষ করে দিতে চাই।’ রেসপন্স না পেলে আমরা অন্য কাজে রেসপন্স করব বলে উল্লেখ করেন তিনি। কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, এ বিষয়টাকে নিয়ে আমাদের হয়তো আর পার্স্যু করতে হবে না। এ চিঠির পর আর রিকুয়েস্ট করা হবে না। চিঠির জবাব না পেলে ওই সময়ের পর (১৫ ডিসেম্বর) আমরা বসে সিদ্ধান্ত নেব, কোনটা গুরুত্বপূর্ণ কি না। সব কিছু খুবই গুরুত্বপূর্ণও না। সরকারেরও বলার থাকবে, যুক্তি থাকতে পারে- এটা অলরেডি কোথাও অ্যাড্রেস আছে। যদি অ্যাড্রেস হয়ে থাকে সেটাও যদি আমরা জানতে পারি আমাদের আর পার্স্যু করার প্রয়োজন পড়ে না। সরকারের রেসপন্সটা এ বিষয়ে কী সেটা জানতে চেয়েছিলাম জানিয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, তাদেরও তো একটা যুক্তি থাকতে পারে এই প্রস্তাব নিয়ে কারণ অথরিটি তারা। আইন প্রণয়নের অথরিটি সরকার এবং পার্লামেন্ট। সরকার এবং পার্লামেন্ট তাদের প্রজ্ঞা ব্যবহার করবে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা যদি মনে করেন না। পর্যাপ্ত আইন রয়ে গেছে। এ বিষয়ে করণীয় কিছু নেই। সেইটুকু আমাদের জানিয়ে দিলে আমরা বিবেচনা করতাম। আইন সংশোধন না হলে ভোট প্রত্যাশা অনুযায়ী হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না। আমি পর্যাপ্ত বলেছি। চিঠিতে যা বলল ইসি : দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আরপিওর একগুচ্ছ সংশোধনী প্রস্তাব দিয়েছে ইসি। আইন মন্ত্রণালয়ে ৮ আগস্ট এ খসড়া পাঠানোর পর নির্বাচন কমিশন ২৮ সেপ্টেম্বর ও ১০ অক্টোবর দুই দফায় অগ্রগতি জানাতে অনুরোধ করে। এবারে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আরপিও সংশোধন প্রস্তাবের অগ্রগতি কমিশনকে অবগত করার জন্য ‘শেষবারের মতো বিশেষভাবে সনির্বন্ধ’ অনুরোধ করে গতকাল চিঠি দেওয়া হয়েছে। ইসির জনসংযোগ পরিচালক যুগ্মসচিব এস এম আসাদুজ্জামান বলেন, রবিবার উপ-সচিব আবদুল হালিম খান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি আইন মন্ত্রণালয়ের ‘লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, আরপিওর সংশোধন সংক্রান্ত খসড়া বিলের অগ্রগতির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে আগামী ১৫ ডিসেম্বরের  মধ্যে অবগত করার জন্য শেষবারের মতো বিশেষভাবে সনির্বন্ধ অনুরোধ করা হচ্ছে। চিঠিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদের বিধান মতে দায়িত্ব পালনে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করা সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং এর লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ রাষ্ট্র ও সরকারের নির্বাহী বিভাগের একাংশ। দায়িত্ব পালনে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করা ইহার সাংবিধানিক সংবিধিবদ্ধ দায়িত্ব। নির্বাচন কমিশন মনে করে, সংবিধান ও আইনের সুস্পষ্ট বিধানের ব্যত্যয়ে কমিশনের যাচিত অনুরোধ ও চাহিদা উপেক্ষিত হলে কমিশন স্বীয় দায়িত্ব পালনে আবশ্যক সক্ষমতা অর্জন করতে পারবে না। এতে নির্বাচন বিষয়ে কমিশনের সক্ষমতা, স্বাধীনতা এবং সরকারের সদিচ্ছা প্রশ্নে জনমনে অনাকাক্সিক্ষত সংশয়ের উদ্রেক হতে পারে।

সর্বশেষ খবর