বুধবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

গরু মহিষের আক্রমণে আওয়ামী লীগ নেতাসহ পাঁচজনের মৃত্যু

প্রতিদিন ডেস্ক

টাঙ্গাইল ও নোয়াখালীতে মহিষ ও গরুর আক্রমণে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে টাঙ্গাইলে পাগলা মহিষের আক্রমণে আওয়ামী লীগ নেতাসহ তিনজন এবং নোয়াখালীতে গরুর আক্রমণে বাবা-ছেলের মৃত্যু হয়। আমাদের প্রতিনিধিরা এ খবর পাঠিয়েছেন।

টাঙ্গাইল : জেলার দেলদুয়ারে পাগলা মহিষের আক্রমণে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গ্রামবাসী মহিষটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেন। নিহতরা হলেন- হাসমত আলী খান (৫৭), হাজেরা বেগম (৪২) ও কিতাব আলী। এর মধ্যে হাসমত আলী খান লাউহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রবিবার পার্শ্ববর্তী বারোপাখিয়া গ্রামের শরীফ মিয়ার পালিত মহিষ হঠাৎ অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। যাকে সামনে পায়, তাকেই গুঁতাতে থাকে। মহিষের আক্রমণে শরীফ মিয়াও আহত হন। একপর্যায়ে মহিষটিকে স্থানীয় লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে ধাওয়া করে। পরে মহিষটি লাউহাটি এলাকায় চলে আসে। সেখানেও মানুষের ওপর আক্রমণ করে মহিষটি।

লাউহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন মোহাম্মদ খান জানান, মহিষের আক্রমণে ১০-১২ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারুটিয়া গ্রামের আজগর আলীর স্ত্রী হাজেরা বেগম (৪২) রবিবার বিকালে মারা যান। সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাতে মারা যান হাসমত আলী (৫৭)। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বারোপাখিয়া গ্রামের কিতাব আলীর অবস্থার অবনতি হয় সোমবার রাতে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শিবলী সাদিক বলেন, মানুষের যাতে ক্ষতি না হয় সে জন্য মহিষটির আশপাশেই হাসমত আলী অবস্থান করছিলেন। মানুষকে সতর্ক করছিলেন। এর মধ্যে হঠাৎ তাকেই আক্রমণ করে মহিষটি। হাসমত আলী খানের ছেলে স্বাধীন খান বলেন, ‘তিনি মানুষকে রক্ষা করতে গিয়ে নিজের জীবন দিয়েছেন।’ দেলদুয়ার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন সারোয়ার জানান, মহিষের আক্রমণের খবর পাওয়ার পর প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে অজ্ঞানকারক দল ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। দলটি ঢাকা থেকে এসে মহিষকে অচেতন করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তবে এর আগেই স্থানীয় লোকজন মহিষটিকে মেরে ফেলেন।

নোয়াখালী : জেলার কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের উত্তর জগদানন্দ গ্রামে গরুর আক্রমণে বাবা-ছেলের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া দুজন হলেন- উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর জগদানন্দ গ্রামের বজু মিয়া ওরফে বজু মাঝি (৭০) ও তার ছেলে মো. মানিক (৪৫)। মঙ্গলবার সকালে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মানিক মারা যান। এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি নিজ বাড়িতে মারা যান তার বাবা বজু মাঝি।

ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বলেন, ঘটনা আরও কয়েক দিন আগের। প্রথমে তারা তেমন চিকিৎসা করাননি। পরে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাবা-ছেলে দুজনই মারা যান। স্থানীয় বাসিন্দা জসিম উদ্দিন জানান, গত ১৪ জানুয়ারি সকাল ৮টার দিকে মানিক গোয়ালঘর থেকে তাদের পালিত দুটি ষাঁড় বের করে বাইরে বাঁধেন। ওই সময় আকস্মিক ষাঁড় দুটি তাকে আক্রমণ করে মাঠিতে ফেলে দেয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরিবারের সদস্যরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকাল ৭টায় তার মৃত্যু হয়।  তিনি আরও জানান, এক বছর আগে মানিকের বাবা বজু মিয়াকে গরু আক্রমণ করে। এতে তিনি গরু বাঁধার রশির খুঁটির আঘাতে পায়ে গুরুতর জখম হন। ওই আঘাতে তার পায়ে পচন দেখা দেয়। এক বছর অসুস্থ থাকার পর ১৭ জানুয়ারি তিনি মারা যান।

 

সর্বশেষ খবর