শুক্রবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিদ্যুৎ ও আপ্যায়ন খরচ অর্ধেকে এনেছে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বেশ কিছু খাতে খরচের লাগাম টেনে ধরেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। সাশ্রয়ী নীতি অনুসরণ করে বিদ্যুৎ বিল ও আপ্যায়ন খরচ কমিয়ে প্রায় অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছে। আর জ্বালানি তেল খরচ কমানো হয়েছে প্রায় এক-চতুর্থাংশ। এ ছাড়া বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ কমিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংসদীয় বাজেট থেকে ২৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।

গত বছর পর্যায়ক্রমে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও আপ্যায়ন খাতের ব্যয় কমিয়ে আনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। ২০২২ সালের জুন-সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ব্যয়ের হিসাব থেকে দেখা যায়, বিদ্যুৎ বিল হ্রাস পেয়েছে ৪৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ, জ্বালানি তেল অকটেন ও ডিজেলের ব্যবহার কমানো হয়েছে ২৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং আপ্যায়ন খাতের ব্যয় কমানো হয়েছে ৪৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সেপ্টেম্বর-পরবর্তী মাসগুলোতেও ব্যয় সাশ্রয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। জানা গেছে, ২০২২ সালের জুন মাসে বিদ্যুৎ খাতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ব্যয় ছিল ২৩ লাখ ৮ হাজার ৮৩৮ টাকা। সাশ্রয়ী নীতি অনুসরণ করায় জুলাইয়ে বিল হয় ২১ লাখ ৩৮ হাজার ৬২৫ টাকা। আগস্টের ব্যয় ১৫ লাখ ৭৩ হাজার ৮১৩ টাকা। জুন মাসের তুলনায় খরচ ৪৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ (প্রায় অর্ধেক) কমিয়ে সেপ্টেম্বরে বিদ্যুৎ খাতের ব্যয় ১২ লাখ ২৭ হাজার ৩৫৩ টাকায় নামিয়ে আনা হয়। ২০২২-এর জুনে পরিবহনের জন্য জ্বালানি খাতে অকটেন ও ডিজেলের ব্যবহার ছিল ৪১ হাজার ৪০২ লিটার। জুলাইয়ে জ্বালানি তেলের ব্যবহার কমিয়ে হয় ৩৭ হাজার ২ লিটার। আগস্টে ৩৪ হাজার ৮৪১ লিটার।

আর জুন মাস থেকে ৯ হাজার ৬৬৬ লিটার তেল (২৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ) কম ব্যবহার করে সেপ্টেম্বরে তেলের মোট ব্যবহার ৩১ হাজার ৭৩৬ লিটারে নামিয়ে আনা হয়। জুনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আপ্যায়ন ব্যয় ছিল ৩ লাখ ২১ হাজার ৬৬৫ টাকা। জুলাইয়ের আপ্যায়ন ব্যয় ২ লাখ ৬৭ হাজার ৫৭০ টাকায় নামিয়ে আনা হয়। আগস্টের আপ্যায়ন ব্যয় ২ লাখ ১৮ হাজার ৪১০ টাকা। জুন থেকে ৪৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ খরচ কমিয়ে সেপ্টেম্বর আপ্যায়ন ব্যয় ১ লাখ ৭৪ হাজার ১২০ টাকায় নামিয়ে আনা হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকি বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর অফিসের ব্যয় কমানোর কাজটি অনেক আগে থেকে শুরু করেছি। বস্তুত দেশে যখন সব মানুষকে টিকা দেওয়ার কার্যক্রম হাতে নিয়েছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। তখনই তিনি নির্দেশনা দিয়েছিলেন, যেখান থেকে টাকা বাঁচানো যায় সেই টাকা বাঁচিয়ে আমরা যেন অর্থবিভাগকে বলি ওই টাকাটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে দিয়ে দেওয়ার জন্য। সেই কাজটি আমরা ২০২০ সাল থেকে শুরু করেছি। তিনি বলেন, ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক সংকট শুরু হলো এবং ঢেউটা বাংলাদেশ পর্যন্ত আসলো তখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা আমাদের অফিসের ব্যয় আরও কমানোর কাজ শুরু করলাম। প্রথমত আমরা বিদ্যুতে হাত দিলাম। তারপর আমরা গাড়িগুলোকে একটু রেশনিং করে জ্বালানি খরচও কমিয়ে এনেছি। একইভাবে আপ্যায়ন খাতেও আমরা ব্যয় কমিয়ে নিয়ে এসেছি। আমরা যে আপ্যায়নের মেন্যুটি করেছি সেটি খুবই সাদামাটা। বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ কমিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংসদীয় বাজেট থেকে ২৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ফেরত দেওয়ার কথা জানান আহসান কিবরিয়া। চলতি অর্থবছরের শেষে প্রধানমন্ত্রীর অফিসের ব্যয় আরও কমে আসবে বলে জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর