নওগাঁ শহর থেকে আটকের পর র্যাবের হেফাজতে সুলতানা জেসমিন (৪৫) নামের এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো মামলা না হওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন হাই কোর্ট। হাই কোর্ট প্রশ্ন রেখে বলেছেন, চার দিন পার হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি কেন? রাষ্ট্রের কি কোনো দায়িত্ব নেই? অনেক ক্ষেত্রেই রাষ্ট্র মামলা করতে পারে। গতকাল বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষকে উদ্দেশ করে এ কথা বলেন। পরে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় ময়নাতদন্ত রিপোর্ট, ওই নারী র্যাবের কোন কোন কর্মকর্তার অধীনে ছিলেন, এ জাতীয় যাবতীয় তথ্য চেয়েছেন হাই কোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষকে যাবতীয় তথ্য আজকের মধ্যে দাখিল করতে বলা হয়েছে। এর আগে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক। তিনি আদালতে বলেন, গত ১৯ মার্চ তাকে (সুলতানা জেসমিনকে) আটক করে হেফাজতে নেয় র্যাব। আটক করার ৩১ ঘণ্টা পর তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। আর হেফাজতে নেওয়ার পর অসুস্থ হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে গত ২৪ মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার মাথায় আঘাত পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। আমি খোঁজখবর নিয়ে জানতে পেরেছি এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। তবে নিহতের পরিবারের অভিযোগ ওই নারীর হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টির তদন্ত হওয়া উচিত। এ সময় হাই কোর্ট আদালতে উপস্থিত সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদকে উদ্দেশ করে বলেন, এই মুহূর্তে খোঁজ নেন কোনো মামলা হয়েছে কি না। ১৫ মিনিটের মধ্যে রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনারের কাছে খোঁজ নেওয়ার পর সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতকে বলেন, গত ২৪ মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই নারীর মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তের পর যথাযথ প্রক্রিয়ায় পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়েছে কি না, আদালত জানতে চাইলে আবুল কালাম খান দাউদ বলেন, নিহতের পরিবারের সদস্যরা এখন পর্যন্ত কোনো মামলা করেনি। এ কারণে রাষ্ট্রও মামলা করেনি। এ সময় আদালত উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, ‘কে বলেছে রাষ্ট্র মামলা করতে পারে না? কোথায় পেয়েছেন? পরিবারের সদস্যরা মামলা করেনি তো কী হয়েছে? রাষ্ট্রের কি কোনো দায়িত্ব নেই? রাষ্ট্র কেন মামলা করল না। অনেক ক্ষেত্রেই রাষ্ট্র মামলা করতে পারে। অভিযোগ উঠেছে হেফাজতে ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে। সারা দেশে এ নিয়ে আলোচনা চলছে।’