ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে বিশাল এক চক্র ধরা পড়েছিল ২০১৫ সালের অাগস্ট। একদল দালাল ও ডাক্তারদের লোভের শিকার হয়েছিলেন লাম্বানি ও দলিত সম্প্রদায়ের প্রায় ২ হাজার ২০০ নারী। কোন কারণ ছাড়াই তাদের প্রত্যেকের জরায়ু কেটে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সে বছরই স্বাস্থ্য দপ্তরের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট দেখে এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত চার হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। অথচ ২ বছর পর এখনও দিব্যি খোলা রয়েছে হাসপাতাল। চিকিৎসাও চলছে। আর চক্রও তার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে কি না, কে জানে!
সোমবার নারী সমাজকর্মী ও ক্ষতিগ্রস্ত নারী মিলিয়ে প্রায় কয়েক হাজার মানুষ এরই প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখালেন কালাবুরাগি ডেপুটি কমিশনারের অফিসের সামনে। সঙ্গে ছিল অলটারনেটিভ ল ফোরাম, বিমোচনা ও স্বচ্ছ অভিযানের মতো স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিও। এএলএফ-এর সদস্য তথা অ্যাডভোকেট বিনয় শ্রীনিবাস ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বললেন, 'অল্প সময়ে প্রচুর টাকা কামানোর জন্য এই নারীদের টার্গেট করে হাসপাতালগুলি। এটা মানবাধিকার লঙ্ঘন। কর্নাটক মডিক্যাল কাউন্সিল আইন অনুযায়ী দোষীদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় অভিযোগ আনা উচিত। ৪টি হাসপাতালকে অবিলম্বে বন্ধ করে তার ডাক্তারদের গ্রেপ্তার করা উচিত সরকারের।'
হাসপাতালগুলোর বিরুদ্ধে সুয়োমোটো মামলা করে সে বছরই রিপোর্ট দায়ের করেছিল নারী কমিশন। রিপোর্টে অভিযোগ করা হয়েছে, সামান্য পেটে ব্যাথা বা সাদা স্রাবজনিত সমস্যা নিয়ে নারীরা হাসপাতালে গেলেই বিনা কারণে তাদের হিস্টেরেকটোমি (জরায়ু বাদ দিতে অপারেশন) করে দিত ডাক্তাররা। তারা বিকল্প কোন চিকিত্সার কথাই বলতেন না। ক্যান্সার হওয়ার ভয়ে বাধ্য হয়ে ডাক্তারদের পরামর্শ শুনতে বাধ্য হতেন নারী ও তাদের পরিবার। একদল আশা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে আবার হাসপাতালগুলো রোগী ধরে দেওয়ার জন্য বাড়তি ইনসেন্টিভও দিত বলে ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। মূলত গরিব নারীদের হিস্টেরেকটোমির জন্য টার্গেট করা হত এবং ডাক্তারদের এই লোভের শিকার হওয়া নারীদেরর মধ্যে ৪০%-৫০%-এরই বয়স ৪০-এর নীচে। সূত্র: এই সময়
বিডি-প্রতিদিন/০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭/মাহবুব