জার্মানিতে যেখানে ইহুদি সম্প্রদায়ের মানুষদের নারী-পুরুষ, শিশু-যুবা নির্বিশেষে আটকে রাখা হতো সেই স্থানটিকে বলা হত ‘কনসেনট্রেশন ক্যাম্প’। হিটলার ও তার নাৎসি সেনারা যে অত্যাচার সেই ক্যাম্পগুলিতে চালিয়েছিল, তার বর্ণনা পড়লে শিউরে উঠতে হয় এখনও। পরে সেই আতঙ্ক ফিরে এসেছিল সোভিয়েত যুক্তরাষ্ট্রে, স্ট্যালিনের সময়ে ‘গুলাগ’-এর রূপ ধরে।
বিভিন্ন সময়ে নানা ভাষায় বহু ছবি তৈরি হয়েছে জার্মানদের এই কনসেনট্রেশন ক্যাম্প নিয়ে। গুলাগ নিয়েও। কিন্তু সেইসব নির্মমতা শেষ হয়ে গিয়েছিল হিটলার বা স্ট্যালিনের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই। তার পর পেরিয়ে গিয়েছে দীর্ঘ সময়।
সাম্প্রতিক রাশিয়ার একটি দৈনিক, ‘নোভোয়া গাজেটা’-এ প্রকাশিত খবর অনুয়ায়ী, কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের কালো ছায়া দেখা গিয়েছে বর্তমানেও। রাশিয়ার চেচনিয়ায় তৈরি হয়েছে বেশ কয়েকটি এমন ক্যাম্প, যেখানে বন্দি হিসেবে রাখা হচ্ছে পুরুষ সমকামীদের।
রাশিয়ার ওই দৈনিক অনুযায়ী, চেচনিয়ার এই ক্যাম্পটি আর্গান শহরের একটি পুরনো সেনা ছাউনিতে তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ বা প্রশাসন কেউই এ ব্যাপারে কিছু জানে না বলে জানিয়েছে। প্রসঙ্গত, চেচেন প্রেসিডেন্ট রামজান ক্যাডিরভের তরফ থেকে জানানো হয় যে, সে দেশে কোনও সমকামীই নেই।
খবর অনুসারে, গত এক সপ্তাহে ১০০রও বেশি পুরুষকে ‘সমকামী’ সন্দেহে বন্দি করেছে চেচনিয়ার নিরাপত্তারক্ষীরা। অমানুষিক অত্যাচার করা হয়েছে এই সব বন্দিদের উপরে। ইতোমধ্যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানা গেছে। মারধরের পাশাপাশি ইলেকট্রিক শক-ও দেওয়া হয়েছে বন্দিদের।
এলজিবিটি সম্প্রদায়ের মানুষ পারিবারিক ভাবেও পর্যুদস্তু হয়ে রয়েছে চেচনিয়ায়। পরিবারের সম্মানার্থে প্রাণ হারিয়েছে অনেকেই। যে দেশে ‘অনার কিলিং’-এর কোনও শাস্তি নেই, সেখানে প্রশাসনের এমন নৃশংসতা কী ভাবে আটকানো যাবে, তা নিয়েই চিন্তিত বিশ্ববাসী।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৪ এপ্রিল, ২০১৭/ আব্দুল্লাহ সিফাত-১৪