মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করার দায়ে দেশটির এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ইয়াঙ্গুনের এক আদালত সাংবাদিক সিথু অং মাইন্ট-এর বিরুদ্ধে উস্কানি ও মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন এবং রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে।
সাংবাদিক সিথু অং মাইন্ট ভয়েস অব আমেরিকা ও ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমারসহ বিভিন্ন সংবাদ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। এর আগে ২০২১ সালের আগস্টে সিথু অং মাইন্ট-কে গ্রেফতার করা হয়। তার সাথেই হেত হেত খাইন নামের আরেক ফ্রিল্যান্স সাংবাদিকও গ্রেফতার হন। মাইন্ট দুইটি অভিযোগের সম্মুখীন। অভিযোগগুলো প্রকাশিত এমন তথ্যের সাথে সম্পর্কিত যেগুলো কর্তৃপক্ষের ভাষ্যমতে সামরিক বাহিনীর সমালোচনা করেছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আইনজীবী জানান, সিতু অং মাইন্ট উস্কানি ও মিথ্যা সংবাদ প্রচারের দায়ে, মিয়ানমারের দণ্ডবিধির ৫০৫এ ধারায় আদালতে অভিযুক্ত হন। এছাড়াও, ১২৪এ ধারা অনুযায়ী তাকে রাষ্ট্রদ্রোহের জন্যও অভিযুক্ত করা হয়। ঐ ধারায় সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে “অবজ্ঞা বা অসন্তুষ্টি” সৃষ্টি করতে পারে বলে ধারণা করা সকল কিছুই শাস্তিযোগ্য হিসেবে বিবেচিত।
অভিযোগ প্রমাণিত হলে, প্রথম অভিযোগের জন্য তিন বছর পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় অভিযোগের জন্য ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে তার।
বৃহস্পতিবারের শুনানির পর এক আইনজীবী বলেন, আটক থাকাকালীন সিথু অং মাইন্টকে যথাযথ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
বুধবার আবারও আদালতে হাজির হওয়ার কথা রয়েছে ঐ সাংবাদিকের।
মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করে ভিওএ’র পাঠানো ক্ষুদে বার্তার কোন জবাব দেয়নি মিয়ানমারের সামরিক প্রেস দল। ইতোপূর্বে সংবাদ প্রচারের জন্য সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার অভিযোগ অস্বীকার করেছিল সামরিক বাহিনী।
সিথু অং মাইন্টের সাথে গ্রেফতার হওয়া আরেক সাংবাদিক, হেত হেত খাইন, মিয়ানমারের অবৈধ সংশ্লিষ্টতা আইনের আওতায় অভিযুক্ত। তিনি ইনসেইন কারাগারে আটক রয়েছেন। তাকে প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবী সামরিক বাহিনী কর্তৃক হয়রানির শিকার হয়ে পালিয়ে গিয়ে লুকিয়ে আছেন।
প্রসঙ্গত, ১ ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত ১২২ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪৮ জন এখনও আটক রয়েছেন। আটকদের মধ্যে ২২ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র গঠন করা হয়েছে। সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা/নিউ দিল্লি টাইমস
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর