শিরোনাম
১৬ নভেম্বর, ২০২০ ১২:১২

নারী শিক্ষার গুরুত্ব দিয়েছেন রসুল (সা.)

মুফতি নূর মুহাম্মদ রাহমানী

নারী শিক্ষার গুরুত্ব দিয়েছেন রসুল (সা.)

ইসলাম নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব মুসলমানের ওপর জ্ঞানার্জন আবশ্যক করেছে। পুরুষদের যেভাবে জ্ঞানার্জন এবং এর প্রচার-প্রসারের প্রতি উৎসাহিত করেছে, সেভাবে নারীদেরও উৎসাহিত করেছে। মহান আল্লাহ মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্য বর্ণনা করে বলেন, ‘আমি জিন ও মানুষকে কেবল এ জন্যই সৃষ্টি করেছি যে, তারা আমার ইবাদত করবে।’ সূরা জারিয়াত, আয়াত : ৫৬। আয়াতটিতে মানুষ বলতে শুধু পুরুষ উদ্দেশ্য নয়; বরং নারীরাও উদ্দেশ্য। তাদের ওপরও আবশ্যক আল্লাহর একাত্মবাদে বিশ্বাস করা এবং শিরক থেকে বেঁচে থাকা। ইসলামের সব বিধানই এমন যে, পুরুষদের ওপর যেমন নামাজ ফরজ, তেমনি নারীদের ওপরও ফরজ। পুরুষদের জন্য যেভাবে বিশুদ্ধ জ্ঞান ছাড়া ফরজ এবং বিভিন্ন দায়িত্ব আদায় করা সম্ভব নয়, তেমনি নারীদের জন্যও এগুলো বিশুদ্ধ জ্ঞান ছাড়া সম্পাদন করা সম্ভব হবে না, এটাই স্বাভাবিক নয় কি? পুরুষদের শিক্ষা-দীক্ষা যতটুকু জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক নারীদের শিক্ষা-দীক্ষাও ততটুকু জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণের দাবিদার। মহানবীর শিক্ষা ও পবিত্র সিরাতে নারীদের শিক্ষা-দীক্ষার ইতিবাচক দিকটা খুবই গুরুত্বসহকারে বিদ্যমান। তিনি নারীদের শিক্ষা-দীক্ষা গ্রহণের প্রতি বিশেষভাবে সতর্ক দৃষ্টি রাখতেন। তিনি বিভিন্ন সময় নারীদের উদ্দেশে শিক্ষামূলক ভাষণ দিয়ে উদাত্ত কণ্ঠে আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, প্রত্যেক মুসলমানের ওপর জ্ঞানার্জন করা ফরজ। ইবনে মাজাহ। এই হাদিসের মধ্যে পুরুষদের সঙ্গে নারীরাও অন্তর্ভুক্ত। তৎকালীন আরবে ক্রীতদাসীদের সামাজিক কোনো অবস্থান ছিল না। মহানবী (সা.) এ ধরনের নারীকে শিক্ষা-দীক্ষা দিতে বলেছেন। তার সঙ্গে ভালো ব্যবহারের কথা বলেছেন। এমনকি তাকে স্বাধীন করে বিয়ে করলে দ্বিগুণ সওয়াব ও প্রতিদানের কথাও বলেছেন। মহানবী (সা.) বিভিন্ন সময়ে নারীদের শিক্ষা-দীক্ষা দেওয়ার জন্য নারীর মা-বাবাকে জান্নাতের সুসংবাদ শুনিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘যে তিনটি কন্যাসন্তান অথবা তিন বোন প্রতিপালন করল, তাদের শিষ্টাচারিতা শিক্ষা দিল এবং তাদের প্রতি দয়া করল, অবশেষে আল্লাহ তাদের মুখাপেক্ষীহীন করে দিলেন। তাহলে তার জন্য আল্লাহ জান্নাত অবধারিত করে দেবেন। তখন এক সাহাবি জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রসুল! দুটি কন্যা প্রতিপালন করলেও? তিনি উত্তরে বললেন, দুটি করলেও।’ শারহুস সুন্নাহ।

আলাদা দিন নির্ধারণ করে মহানবী (সা.) নারীদের নসিহত করেছেন। হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, নারীরা নবীজি (সা.)-এর কাছে বলল, আপনার কাছে তো সব সময় পুরুষদের ভিড় থাকে, তাই আমাদের তালিম-তারবিয়াতের জন্য আলাদা একটা দিন নির্ধারণ করুন! নবীজি (সা.) তাদের জন্য একটা দিন নির্ধারণ করলেন, তাদের কাছে গিয়ে ওয়াজ-নসিহত করলেন এবং নেক কাজ করার আদেশ করলেন। বুখারি।

►  লেখক : মুফতি ও মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুল উলুম বাগে জান্নাত, চাষাঢ়া, নারায়ণগঞ্জ।


বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

সর্বশেষ খবর