ঢাকা মহানগর পুলিশের অন্তত ১৬টি থানায় গতকাল হামলার ঘটনা ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার খবরে উত্তেজিত জনতা থানায় থানায় হামলা চালায়। তারা ভাঙচুরসহ আগুন ধরিয়ে দেয় থানায়। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, রাজধানীর উত্তরা পূর্ব, উত্তরা মডেল, খিলক্ষেত, ভাটারা, বাড্ডা, খিলগাঁও, রামপুরা, যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর, কদমতলী, শাহবাগ, মোহাম্মদপুর, আদাবর, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল, দারুস সালাম এবং মিরপুর থানায় হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় জনরোষ থেকে বাঁচতে একের পর এক গুলি ছুড়েছে পুলিশ। হামলা ও গুলির ঘটনায় ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনের হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। গতকাল দুপুরের পর থেকে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
জানা গেছে, ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকায় অবস্থিত বাড্ডা থানার চতুর্দিক থেকেই এলাকাবাসী ও আন্দোলনকারীরা ঘিরে রাখে। এমন পরিস্থিতিতে থানায় আটকেপড়া পুলিশ সদস্যরা কোনোদিকেই বের হতে পারছিলেন না। ফলে ভেতর থেকে ওসির নেতৃত্বে গুলি, টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়েছে পুলিশ। একই সঙ্গে আন্দোলনকারীরাও বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিয়ে মুহুর্মুহু ইটপাটকেল ছুড়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, বাড্ডা থানার পুলিশ এতদিন স্থানীয় এলাকাবাসীকে খুবই অত্যাচার নির্যাতন করেছে। এখন সরকার ক্ষমতা ছাড়লেও তারা মানুষের কাছে আত্মসমর্পণ করছে না বরং মানুষকে গুলি করছে। গতকাল দুপুর ২টায় যাত্রাবাড়ী থানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন আন্দোলনকারীরা। এ ছাড়া থানার পাশের আরেকটি ভবনের সামনে রাখা সব গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। যাত্রাবাড়ী থানার ভেতরে অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যরা তখন গুলি ছুড়তে থাকেন। এতে অনেকে গুলিবিদ্ধ হন বলে জানা গেছে। সেখানে অবস্থানরত সেনা সদস্যরা তাদের থামানোর চেষ্টা করেন। বিকাল ৪টায় উত্তরা পূর্ব থানা ও র্যাবের অফিসে একদল লোক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ গুলি করা শুরু করে। এ হামলা চালানোর পর পুলিশ ও র??্যাব সদস্যরা ব্যাপক গুলিবর্ষণ করলে এক শিশু গুলিবিদ্ধ হয়। একই সময়ে বিজয় মিছিল নিয়ে ছাত্র-জনতা মিরপুর-১০ নম্বরে পৌছালে তাদের একটি দল থানা আক্রমণ করতে যায়। এ সময় মিরপুর থানা পুলিশ আত্মরক্ষার্থে ছড়রা গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে অন্তত ২০ জন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে সেনাবাহিনী টহল গাড়ি তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ছাড়া খিলখাঁও এবং খিলক্ষেত থানায় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই দুই থানার কার্যক্রম বন্ধ করে পুলিশ সদস্যরা নিরাপদে সরে গেছেন বলে জানা গেছে। রাতে মোহাম্মদপুর থানায় আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা।
এদিকে নিরাপত্তার কারণে কদমতলী থানার কার্যক্রম রবিবার রাত থেকে সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ওয়ারী বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) শামসুল ইসলাম নয়ন বলেন, আমরা কদমতলী থানার অপারেশনাল কার্যক্রম সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রাবাড়ী থানায় স্থানান্তর করেছি। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে এই থানার কার্যক্রম বন্ধ রেখেছি।