ঋতুরাজ বসন্তের বিদায়ে ঝরে গেছে শিমুল-পলাশ। তবে প্রকৃতি থেকে একেবারে মুছে যায়নি সেই রক্তিম রঙের ছটা। ফের ডালে ডালে ফুটেছে রক্তিম কৃষ্ণচূড়া, বেগুনি রঙের জারুল আর গাছে গাছে ঝুলে আছে হলুদ সোনালু ফুল। ঋতুর পালাবদলে প্রতিনিয়ত এভাবেই ভিন্নরূপে সাজে দেশের অন্যতম প্রকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমিখ্যাত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। গ্রীষ্মের তপ্ত দিনেও প্রকৃতির এ অপরূপ সৌন্দর্য ক্যাম্পাসজুড়ে দারুণ উপভোগ্য হয়ে উঠেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী মাঠের পাশ, ইবলিশ চত্বরসংলগ্ন রাস্তা থেকে ছাত্রী হলগুলোর দুই পাশ, স্যার জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সামন ও কৃষি অনুষদের রাস্তা, বধ্যভূমি ও বোটানিক্যাল গার্ডেনসহ বিভিন্ন জায়গায় কৃষ্ণচূড়া, জারুল ও সোনালু ফুল শোভাবর্ধন করছে। বিকাল হলেই ক্যাম্পাসের এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভিড় জমান শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা। কেউ প্রিয়জনের খোঁপায় ফুল গুঁজে দিচ্ছেন, কেউ একমুঠো ফুল শূন্যে উড়িয়ে মুহূর্তটা ফ্রেমবন্দি করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী জিসা আকন্দ বলেন, ‘ঋতুবৈচিত্র্যের এ দেশে প্রতিটি ঋতুতেই আছে আলাদা সৌন্দর্য। ঋতুভেদে চিরসবুজ এ ক্যাম্পাস নতুনরূপে সাজে যা আমাদের হৃদয় সজীব ও সতেজ করে। মানসিক প্রশান্তি দেয়।’ ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা এক দম্পতি বলেন, ‘কংক্রিটের শহরে রকমারি সৌন্দর্যে ভরা এ ক্যাম্পাস একটু প্রশান্তির রসদ জোগায়।’
উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শহিদুল আলম জানান, গাছগুলো কেবল সৌন্দর্যবর্ধকই নয়, এতে আছে নানান ঔষধি গুণ। জারুল গাছের পাতা ও বাকলে করোসোলিক অ্যাসিড আছে। গবেষণামতে এ অ্যাসিড রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সহায়ক ও ইনসুলিনের মতো কাজ করে। সোনালুর পাতা, বাকল ও শেকড় জ্বর, জন্ডিস, চর্মরোগ ও পেটের সমস্যায় উপকারী। কৃষ্ণচূড়ার পাতা ও ফুলে প্রদাহ ও জীবাণুনাশক বৈশিষ্ট্য রয়েছে।