রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে প্রথমবর্ষের ভোটাধিকারের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তবে এখন পর্যন্ত এ ঘটনার কোনো তদন্ত কিংবা জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে নির্বাচন কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ওই ঘটনায় কেউ কারও বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব। তবে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ৩১ সেপ্টেম্বর মনোনয়ন বিতরণের শেষ দিনে ছাত্রদল, শিবির ও সমন্বয়কসহ অন্য সংগঠনের মধ্যে কয়েকদফা সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত আটজন আহত হয়। প্রথমবর্ষের ভোটাধিকারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে ছাত্রদল। দলের সভাপতি কোষাধ্যক্ষ কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়নের কার্যক্রম বন্ধ করেন। পরে অন্য পক্ষরা এসে বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। তবে বিকাল পর্যন্ত দাবি আদায়ে অনড় ছিল ছাত্রদল। শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহীর অভিযোগ- শিবির, সমন্বয়ক ও বাগছাসের নেতা-কর্মীরা তাদের ওপর হামলা করেছে। এতে তাদের নারী নেত্রীসহ অনেকে আহত হয়েছে। তবে প্রশাসনের কাছে লিখিত কোনো অভিযোগ দেয়নি তিনি। ফুটেজ দেখে অপরাধীদের চিহ্নিত করে বিচারের দাবি জানান তিনি। অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগে শাখা শিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান বলেন, আমরা মনোনয়ন উত্তোলন করতে গিয়েছিলাম। তখন তারাই মব সৃষ্টি করে এবং আমাদের ওপর বোতল নিক্ষেপ করে। আমরা ধৈর্য ধরেছি। আমরা বিশৃঙ্খলা চাইনি। তারা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। সেটা বাস্তবায়ন হতে দেওয়া হবে না।
দুই দিন বাড়ল মনোনয়নপত্র বিতরণের সময় : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিতরণের সময়সীমা দুই দিন বাড়ানো হয়েছে। প্রথম বর্ষের ভোটাধিকার নিয়েও কাজ করছে প্রশাসন। গতকাল নির্বাচন কমিশনের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোস্তফা কামাল আকন্দ বলেন, শেষ দিনের উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে দুই দিন মনোনয়নপত্র বিতরণ পেছানো হয়েছে। প্রথম বর্ষ নিয়ে বেশকিছু পর্যালোচনা আছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
এর আগে ৩১ আগস্ট মনোনয়ন বিতরণের শেষ দিন ছাত্রদল, শিবির ও সমন্বয়কসহ অন্য সংগঠনের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত আটজন আহত হন। প্রথম বর্ষের ভোটাধিকারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে ছাত্রদল। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি কোষাধ্যক্ষ কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়নপত্র বিতরণের কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। পরে অন্য পক্ষরা এসে বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে। তবে দাবি আদায়ে আন্দোলন চালিয়ে যায় ছাত্রদল।
এদিকে গতকাল দুপুরে প্রথম বর্ষের ভোটাধিকার ও নারী নেত্রীদের ওপর হামলার অভিযোগ তুলে ফের অবস্থান কর্মসূচি করেছে ছাত্রদল।
এতে শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, রবিবার ছাত্রদলের ওপর হামলার জন্য প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি সংগঠনকে ১৫ লাখ টাকা দিয়েছে। শিক্ষক নিয়োগে এই উপাচার্য কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করছেন। এ আন্দোলন শুধু ছাত্রদলের নয়, প্রতিটি শিক্ষার্থীর হওয়ার কথা ছিল। অথচ রাকসুর মুলা ঝুলিয়ে অন্যদের বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে। আন্দোলনে আমাদের নারী নেত্রীদের ওপর হামলা হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই। অবিলম্বে প্রথম বর্ষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে না দিলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তিনি। সংশোধিত তফসিল অনুসারে, ২ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিতরণ চলবে। মনোনয়নপত্র দাখিল ৩-৪ সেপ্টেম্বর, ৮ সেপ্টেম্বর প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ, ৯ সেপ্টেম্বর আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি, ১০ সেপ্টেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহার, ১১ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ এবং ২৫ সেপ্টেম্বর নির্বাচন।