ওজন কমানো নিয়ে অনেকেই প্রতিনিয়ত লড়াই চালিয়ে যান। কেউ দিনে কয়েক গ্লাস লেবু-মধুর পানীয় খান, কেউ নিয়ম করে শরীরচর্চা করেন, কেউ আবার ভরসা রাখেন ব্ল্যাক কফির ওপর। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে—দ্রুত ওজন কমাতে কোনটি সত্যিই কার্যকর?
পুষ্টিবিদদের মতে, ওজন কমানোর প্রক্রিয়া কখনওই রাতারাতি হয় না। এটি একটি ধৈর্য ও নিয়ম মেনে চলার বিষয়। শরীরের মেদ ঝরাতে অনেকে লেবু-মধুর পানীয়র ওপর ভরসা রাখেন। এতে থাকা লেবুর ডাইউরেটিক গুণাগুণ শরীর থেকে বাড়তি জল ও টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। আবার লেবুতে থাকা পেকটিন ফাইবার হজমে সহায়ক। অন্যদিকে, মধু বিপাকহারের গতি বাড়ায়, যা কিছুটা ক্যালোরি খরচে সহায়ক হতে পারে।
ভারতের নামী ক্রীড়াবিদ বিনেশ ফোগট গত বছর প্যারিস অলিম্পিকের ফাইনালে খেলতে পারেননি শুধুমাত্র অতিরিক্ত ওজনের কারণে। শেষ রাতে স্কিপিং, জগিং, সাইকেল চালানো এমনকি না খেয়ে থেকেও ওজন কমানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সফল হননি। এটি প্রমাণ করে যে এক রাতের প্রচেষ্টা ওজন কমাতে যথেষ্ট নয়।
অনেকেই ওজন কমাতে ব্ল্যাক কফির ওপর নির্ভর করেন। গবেষণায় জানা গেছে, কফি টাইপ ২ ডায়াবিটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি কিছুটা কমাতে পারে। তবে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে কফির ভূমিকা এখনও নির্দিষ্টভাবে প্রমাণিত নয়।
সবচেয়ে কার্যকরী উপায়: নিয়মিত শরীরচর্চা
বিশেষজ্ঞদের মতে, ওজন কমাতে সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হলো শরীরচর্চা। নিয়মিত হাঁটা, দৌড়ানো, সাইকেল চালানো, জগিং দীর্ঘমেয়াদে মেদ ঝরাতে সাহায্য করে। তবে শুধু শরীরচর্চা করলেই হবে না, জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসেও আনতে হবে পরিবর্তন।
দ্রুত ওজন কমাতে যেসব অভ্যাস বদলানো জরুরি:
১. রাতের খাবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে খেয়ে নেওয়া
২. রাতের খাবার ও ঘুমের মধ্যে কমপক্ষে ৩ ঘণ্টার ব্যবধান
৩. কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে প্রোটিন ও ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া
৪. শোবার আগে কফির বদলে হালকা গরম জল পান করা
৫. ঘুমের রুটিন ঠিক রাখা
এই নিয়মগুলো মেনে চললে শুধু ওজনই নয়, সামগ্রিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে।
লেবু-মধুর পানীয় ও কফি কিছুটা সহায়ক হলেও, দ্রুত ও টেকসইভাবে ওজন কমাতে সবচেয়ে কার্যকর উপায় নিয়মিত শরীরচর্চা ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস। শরীর সুস্থ রাখতে প্রয়োজন ধৈর্য, শৃঙ্খলা এবং সচেতনতা।
বিডি প্রতিদিন/মুসা