চট্টগ্রামের রাউজানে দুর্বৃত্তের গুলিতে মোহাম্মদ আলমগীর ওরফে আলম এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাউজান পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের পশ্চিম রাউজানের চারাবটতল বাজারসংলগ্ন কায়কোবাদ জামে মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আলমগীর আলম পূর্ব রাউজান সিদ্দিক চৌধুরীর পাড়ার আবদুস সাত্তারের ছেলে ও স্থানীয় যুবদল নেতা হিসেবে পরিচিত বলে জানা গেছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে তিনি একাধিক মামলায় দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর তিনি জেল থেকে ছাড়া পান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, যুবদল কর্মী আলমগীর আলম মোটরসাইকেলে পাশের গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। এসময় কায়কোবাদ জামে মসজিদের কবরস্থানে লুকিয়ে থাকা আটজন অস্ত্রধারী আলমগীরকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। অস্ত্রধারীরা তাঁকে হত্যার পর রাঙামাটি সড়ক দিয়ে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে পালিয়ে যান। পুলিশ তাঁদের পরিচয় জানাতে পারেনি। নিহত আলমগীরের শরীরে ৫টি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনার সময় আলমগীর আলমের মোটরসাইকেলের পিছনে তাঁর স্ত্রী ও সন্তান একটি অটোরিকশায় ছিলেন। এ ঘটনায় আলমগীর আলমের আত্মীয় মুহাম্মদ রিয়াদও (২৫) গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান, আলমগীর আগে অপরাধজগতে থাকলেও এবার জেল থেকে এসে স্বাভাবিক জীবন যাপন করছিলেন। পূর্বশত্রুতা কিংবা আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। সন্ত্রাসীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে। আমরা এখনো মাঠে আছি।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সাইফুল ইসলাম সান্তু বলেন, দুর্বৃত্তদের গুলিতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আমাদের টিম ঘটনাস্থলে আছে। বিস্তারিত পরে জানাতে পারব।
এদিকে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার এক বিবৃতিতে আলমগীরকে যুবদল কর্মী দাবি করে তাঁর হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের পর গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, নিহত আলমগীর আওয়ামী শাসনামলে দীর্ঘ ১২ বছর কারাভোগের পর সম্প্রতি কারামুক্ত হয়েছিলেন। রাউজানের বিরাজমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নির্মমভাবে খুন হলেন তিনি। বিবৃতিতে তিনি অবিলম্বে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের এবং খুনের নির্দেশদাতাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
এরআগে গত ৭ অক্টোবর হাটহাজারীতে মোটরসাইকেলে করে আসা অস্ত্রধারীদের ছোড়া গুলিতে মুহাম্মদ আবদুল হাকিম (৫২) নামে এক বিএনপি কর্মী নিহত হন। আবদুল হাকিম রাউজানের বাসিন্দা।
জানা যায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে রাজনৈতিক দ্ব›দ্ব, আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন কারণে রাউজানে অন্তত ১৭ জন খুনের শিকার হয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/এএম