আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও তাদের মিত্ররা জাতির পিতাকে শহীদ করেছিল। একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ থেকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতার কনিষ্ঠপুত্র শেখ রাসেলও রেহাই পায়নি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সাড়ে ৯ বছর বয়সে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছোট্ট শিশু শেখ রাসেলকেও প্রাণ দিতে হয়েছিল। অথচ তিনি আজ জীবিত থাকলে ৫৯ বছর বয়স হতো। জাতির জন্য দিনটি অত্যন্ত কলঙ্কময়।
মঙ্গলবার বিকেলে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠপুত্র শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও অসহায়-দুস্থদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ভ্যানগাড়ি বিতরণ অনুষ্ঠানে হানিফ এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, শিশুরা হচ্ছে ফুলের বাগানের মতো। শিশুদের মন থাকে কোমল। সেই কোমল হৃদয়ে শেখ রাসেলকে ধারণ করে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে এগিয়ে আসবে। এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, যারা এখনও একাত্তরের ঘাতকদের প্রতিনিধিত্ব করছেন তারা পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ডের জন্য ক্ষমা চান। কারণ এর সাথে জিয়াউর রহমান জড়িত ছিলেন। বিএনপিও এটা আদর্শিকভাবে ধারণ করে।
বিএনপি-জামায়াতের নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এই স্বাধীন দেশে পাকিস্তানের আদর্শের কেউ রাজনীতি করতে পারে না। ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত তাদের বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই।
আওয়ামী লীগের এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, বিএনপি বলছে- আওয়ামী লীগ নাকি ২০৪১ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চায়। আমি বলছি, জনগণ চাইলে আমরা আরও থাকতে চাই। ২০৪১ সাল আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যেই আমরা দেশকে উন্নত দেশে পরিণত করব। দেশের মানুষের স্বার্থে ২০৪১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগেরই ক্ষমতায় থাকা উচিত। বিএনপি বাংলাদেশকে পিছিয়ে নিয়ে যেতে চায়। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল বাংলাদেশের মানুষ আর চায় না। কারণ বিএনপি ক্ষমতায় আসলে দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করবে।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ইতিহাসের পাতায় পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট একটি কলঙ্কিত অধ্যায়। খুনিরা ইতিহাসের কাছে কখনোই ক্ষমা পাবে না। বঙ্গবন্ধু যখন দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন, সোনার বাংলা এগিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই সেই পাকিস্তানি পরাজিত শত্রুরা চক্রান্ত করে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যা করে। আজ বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, জেনারেল জিয়া ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। সেই কারণে শেখ রাসেলের জন্মদিনে দাঁড়িয়ে বলতে চাই, বিভীষিকাময় এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা সরাসরি জড়িত ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার তাদের বিচার করেছে এবং বিচারের রায় কার্যকর করেছে। কিন্তু এ হত্যাকাণ্ডের খলনায়ক যারা তাদের মুখোশ এখনও উন্মোচিত হয়নি। তাদের মুখোশ উন্মোচন করে বিচার করা সময়ের দাবি।
অনুষ্ঠানে ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মোজাফফর হোসেনের সভাপতিত্বে ও আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীর সঞ্চালনায় এছাড়াও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।
বিডি প্রতিদিন/এএম