হোয়াইট হাউজের আশপাশে সরকারী অট্টালিকার বারান্দা অথবা ফুটপাথ কিংবা পার্কের বেঞ্চে গৃহহারা মানুষের দিনাতিপাত উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। সারাবিশ্বে বিভিন্নভাবে খবরদারির পাশাপাশি মানবতা সমুন্নত রাখা নিয়ে হরদম মতামত প্রকাশকারি যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতে প্রতি ১০ হাজার জনের মধ্যে ১২৪জনই গৃহহারা। ভিক্ষাবৃত্তি করে এক বেলা খাবার জুটাতে সক্ষম হলেও স্থায়ী আবাস হচ্ছে মুক্ত আকাশ অথবা রেল স্টেশন।
ওয়াশিংটন ডিসির এমন নাজুক পরিস্থিতির তথ্য প্রকাশ করেছে ‘ইউএস কনফারেন্স অব মেয়র্স’ নামক একটি মোর্চা। বড় ৩২ সিটির জনজীবনের হাল-হকিকত গবেষণার পর গত মাসে উদঘাটিত হয় যে, সবচেয়ে বেশী গৃহহারা রয়েছে রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে। আর এ হার হচ্ছে জাতীয়ভিত্তিক গৃহহারার দ্বিগুণ।
জাতীয়ভিত্তিক গৃহহারার হার হচ্ছে ১২.৯%। স্থানীয় সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘কম্যুনিটি পার্টনারশিপ ফর দ্য প্রিভেনশন অব হোমলেসনেস।’ এই সংস্থার সরবরাহকৃত ডাটার মাধ্যমেই জাতীয়ভিত্তিক এ জরিপ চালানো হয়। এতে দেখা যায় যে, ওয়াশিংটন ডিসিতে ৮৩৫০ জন গৃহহারার মধ্যে ৩১৮ জন রাত কাটায় ফুটপাথ অথবা পার্কের বেঞ্চে, ৬২৫৯ জন রয়েছে জরুরি আশ্রয় কেন্দ্রে। অবশিষ্ট ১৭৭৩ জন রাত কাটায় ভ্রাম্যমান শিবিরে। অথবা পাতাল ট্রেনের স্টেশনে। এর বাইরের গৃহহারাদের অবস্থা খুবই সঙ্গীন। দান-দক্ষিণার ওপর তাদের পেট চলে।
এ গবেষণা জরিপের মূল্যায়ন করার সময় সংশ্লিষ্টরা উল্লেখ করেন, দৈনন্দিন জীবন-নির্বাহের ব্যয় অবিশ্বাস্য রকমভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বল্প আয়ের মানুষেরা গৃহহারা হচ্ছেন। অনেকে বাড়ির জন্যে নেয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় সে বাড়ি নিলামে উঠে।
ওয়াশিংটন ডিসি এলাকায় ১০টি আশ্রয় কেন্দ্র পরিচালনাকারি ‘কোয়ালিশন ফর দ্য হোমলেসনেস’র নির্বাহী পরিচালক মাইকেল ফেরেল বলেছেন, 'এখন নতুন করে কেউ গৃহহারা হচ্ছে না। স্বল্প আয়ের লোকজনের জন্যে ভর্তুকির বাড়ি না থাকায় গৃহহারাদের স্থায়ী আবাসন সৃষ্টি করা সম্ভব হচ্ছে না। এখন যে সব বাড়ি নির্মিত হচ্ছে, সেগুলো কর্মজীবী পরিবারের জন্য নয়। এগুলো বিত্তশালিদের জন্যে।'