২৫ মে, ২০১৯ ১৯:৫৩

হাসপাতালের বিছানায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ওমান প্রবাসী মঞ্জু

এইচ এম হুমায়ুন কবির, মাস্কাট (ওমান)


হাসপাতালের বিছানায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ওমান প্রবাসী মঞ্জু

ওমান প্রবাসী রেমিটেন্সযোদ্বা মো. মঞ্জুর আলমের বাঁচার আকুতিতে ভারি হয়ে উঠেছে ওমানের আল-খোদের সুলতান হাসপাতালের চারিদিক। এইতো সেদিন মাত্র দুই বছর আগে মরুর দেশ ওমানে স্বপ্ন পূরণের প্রত্যয়, নিজের পরিবারের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আর দেশে রেমিটেন্স পাঠিয়ে অর্থনীতির চাকা গতিশীল করার লক্ষে পাড়ি জমিয়েছিলেন। কিন্তু উত্তপ্ত মরুভূমির ৩৫-৪০° তাপমাত্রায় দুর্বিসহ গরম আর বৈরী পরিবেশে নিজের সকল সাধ-আহ্লাদকে বিসর্জন দিয়ে রাতদিন বিল্ডিং কন্সট্রাকশানের কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন চট্টগ্রাম জেলার ভোজপুর থানার আমান বাজার দোফারগীল গ্রামের মৃত মো. আব্দুর রহমানের ছেলে মঞ্জু। হাপাতালে ভর্তি হলে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ডাক্তারগণ জানান খাদ্যনালী ফেটে যাওয়া ও আরো কিছু জটিল সমস্যাজনিত কারণে এখনই অপারেশন না করলে ঘটে যেতে পারে যেকোন বড় ধরনের দুর্ঘটনা (মৃত্যু ঝুঁকি) । পরে ডাক্তারদের পরামর্শ মতো সাথে সাথে দীর্ঘ সময় নিয়ে অস্ত্রোপচার করে তাকে তাৎক্ষণিক বিপদমুক্ত করা গেলেও অর্থাভাবে এখন চিকিৎসা চলছে ঢিমেতালে। সুলতান হাসপাতালটিতে চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায় তাকে নিজ দেশে পাঠিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন হাপাতালটির ডাক্তাররা। কিন্তু হাসপাতালের বিল পরিশোধ না করে তো আর হাসপাতাল থেকে রিলিজ নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এমতাবস্থায় অসহায় এই প্রবাসীর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে তার সাথে কর্মরত অন্য শ্রমিকরা। কিন্তু পরিবার থেকে একটাই উত্তর, আমাদের সব ভিটেমাটি বিক্রি করলেও দুই লাখ টাকাও হবে না। আমাদের পক্ষে চিকিৎসা ব্যয় ভার বহন করা একেবারেই অসম্ভব। 

জানা যায়, তার বাবাও বেঁচে নেই। তার স্ত্রী জানিয়েছে, দুবেলা-দুমুঠো খেতে তাদের অনেক বেগ পেতে হয়। এমতাবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়া অসুস্থ প্রবাসী মোহাম্মদ মঞ্জুর আলমের স্ত্রী সন্তানরা তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে তাকে চিকিৎসা করাতে চায়। কিন্তু অর্থের অভাবে তারা সেটা করতে পারছে না। অন্যদিকে হসপিটাল থেকে চাপ দেয়া হচ্ছে তার চিকিৎসার ঔষধ পত্রাদি এবং অপারেশন বাবদ খরচ এর টাকার জন্য। কিন্তু কোনো ভাবেই টাকা জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছে না তাদের। 

কথা হয় এই প্রতিবেদকের সাথে মাস্কাট এর ব্যাবসায়ী এইচ এম ইসমাঈল হুসাইন এর সাথে। তিনি প্রতিবেদককে জানান, অসহায় এই প্রবাসীর ওমানে নেই কোন আত্মীয় স্বজন, নেই কোন পরিচিত মানুষ তাই আমি নিজেই কিছু সহযোগিতা করছি এবং চেষ্টা করছি তহবিল সংগ্রহ করে হাসপাতাল থেকে রিলিজ করে দেশে পাঠানোর জন্য। কিন্তু টাকার পরিমাণ অনেক বেশি হওয়ায় যোগান দিতে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। এমতাবস্থায় আমি না পারছি সরে যেতে, না পারছি তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ করে তার স্ত্রী সন্তানদের কাছে পৌঁছাতে।  

বিডি-প্রতিদিন/২৫ মে, ২০১৯/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর