আমার এক বন্ধু বললো, আজকাল নিজেকে জাদুকর জাদুকর মনে হয়। অবশ্য জাদু শেখা আমার পক্ষে সম্ভবও না। কারণ, কাজটা খুব কঠিন। আমি বললাম, কঠিন না সহজ, সেটা নিয়ে পরে চিন্তা করা যাবে। আগে বল, কেন তোর নিজেকে জাদুকর জাদুকর মনে হয়। নাকি কামরূপকামাক্ষা থেকে ঘুরে এসেছিস? আমি শুনেছি, ওখান থেকে ফেরার পর নাকি সবার মধ্যে একটা জাদুকর জাদুকর ভাব চলে আসে। বন্ধু বললো, ব্যাপারটা আসলে তা না। নিজেকে জাদুকর জাদুকর মনে হয় অন্য একটা কারণে। তুই তো নিশ্চয়ই জানিস জাদুকররা যে কাউকে ভ্যানিশ করে দিতে পারে। আমি বললাম, তুইও মানুষকে ‘নাই’ করে দিতে পারিস নাকি? বন্ধু বললো, পারি তো। অবশ্যই পারি। আর এই জন্যই নিজেকে জাদুকর জাদুকর মনে হয়। আমি অবাক হয়ে বললাম, তুই মানুষকে ‘নাই’ করে দিতে পারিস! কিন্তু কীভাবে? বন্ধু বললো, টাকা ধার দিয়ে। মানে হচ্ছে, যে আমার কাছ থেকে টাকা ধার নেয়, সে-ই ভ্যানিশ হয়ে যায়। আর চোখের সামনে পড়ে না। সামনে পড়লে যদি টাকা ফেরত চাই! আমি বললাম, এতক্ষণে তোর কথা বুঝতে পেরেছি। তুই আসলে ধারের যন্ত্রণার মধ্যে আছিস। এই যন্ত্রণার মধ্যে কিন্তু কম-বেশি সবাই আছে। এমনকি আমি নিজেও আছি। একজনকে টাকা ধার দিয়েছিলাম। এরপরে অবস্থা এমন হয়েছে যে, তার উপর শনির আছর পড়েছে। টাকা চাইলেই একটা না একটা বিপদের কথা বলে। আজ বলে দাদা মারা গেছে, কাল বলে নানা মারা গেছে। পরশু বলে সে নিজে এমন অসুস্থ যে, মারা যায় যায় অবস্থা। কিন্তু চিকিৎসা করানোর টাকা নেই। কী আর করা যাবে, মানবিক কারণে আবার টাকা পাঠাই। এতে ধার দেওয়া টাকার পরিমাণ শুধু বাড়তেই থাকে, বাড়তেই থাকে। আর আমি হিসাব রাখতে রাখতে খাতা ভরে ফেলি। সে অবশ্য আমাকে একটা আশ্বাস দিয়েছে। যদি ধারের টাকার হিসাব রাখতে রাখতে খাতা ভরেই ফেলি, তাহলে নাকি সে নতুন খাতা কিনে দেবে। এ ধরনের আশ্বাস আজকাল কে কাকে দেয়? যাদের মন বড়, একমাত্র তারাই দেয়। বুঝতে হবে ব্যাপারটা। আমি বন্ধুর কাছ থেকে বিদায় নিলাম। পরদিন সকালে তার সঙ্গে আবার দেখা হতেই সে বললো, আমাদের পাড়ার গলিতে যে কোনো হকার ঢুকতে পারে। যেমন মাছ বিক্রেতা, সবজি বিক্রেতা, কেজি দরে কাগজ কেনার লোক। তবে আমি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, একটা লোককে কোনোভাবেই পাড়ার গলিতে ঢুকতে দেব না। কারণ, সে যখন হাঁক ছাড়ে, তখন আমার মনে হয় কেউ বুঝি নতুন করে ধার চাচ্ছে। কলিজার ভেতরে একটা কামড় মারে। এই কামড় প্রতিরোধ করতে চাইলে লোকটাকে গলিতে ঢুকতে নিষেধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। আমি কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বন্ধুর কথার মর্মার্থ বোঝার চেষ্টা করলাম। কিন্তু বুঝতে না পেরে বললাম বুঝিয়ে বলার জন্য। সে বললো, যে লোকটাকে গলিতে ঢোকার ব্যাপারে নিষেধ করবো ভাবছি, সেই লোকটা দা-বঁটিতে ধার দেয়। তো সে যখন গলিতে ঢুকে হাঁক ছাড়ে ‘অ্যাই, বঁটি ধার দিবেননি’, তখন ধারের কথা মনে পড়ে কলিজা তো শুকায়ই, আবার মনে হয় ‘বঁটি ধার দিবেননি’ বলে বেটা আমার বাসার বঁটিটা ধার নিতে চাইছে। কিন্তু বঁটি ধার নিয়ে নিলে আমার বউ মাছ কাটবে কী দিয়ে? আমি বললাম, দেখ বন্ধু, এই যে ধার বিষয়ক আতঙ্ক, এই আতঙ্ক দূর করার একটাই রাস্তা। সেটা হচ্ছে কাউকে ধার না দেওয়া। বন্ধু বললো, পৃথিবীতে থাকলে ধার দিতেই হবে। যদি মঙ্গলগ্রহে চলে যাওয়া যায়, বসবাস করা শুরু করা যায়, তাহলে ধার নাও দেওয়া লাগতে পারে। কিন্তু মঙ্গল গ্রহে যাওয়ার খরচ তো ম্যালা। এত টাকা পাব কই? আমি বললাম, ধার নে।
শিরোনাম
- বিহারে বন্দুক ঠেকিয়ে সরকারি চাকরিজীবীকে অপহরণ করে বিয়ে করল তরুণী
- বিআরটি প্রকল্পে বাস সার্ভিস চালু
- ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটে দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানে সমর্থন ইতালির
- কুকুরকে ধর্ষণ, হাতেনাতে ধরা যুবক
- কোন ওয়েবসাইট ভিজিট করা অনিরাপদ জানবেন যেভাবে
- ছাত্রলীগ নেত্রী নদী গ্রেফতার
- স্বামীর সঙ্গে কেন কাজ করতে নারাজ বিদ্যা বালান?
- ঢাকার বাতাস আজও ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’
- বিরোধীদের ‘সন্ত্রাসবাদী’ হিসেবে প্রচার করত আওয়ামী লীগ: যুক্তরাষ্ট্র
- ঢাকা-জয়দেবপুর রুটে দুই জোড়া কমিউটার ট্রেন চালু
- ‘ক্রিসমাস ট্রি’ ছায়াপথ : উন্মোচিত করলো মহাবিশ্ব গঠনের রহস্য
- ২০২৬ বিশ্বকাপ নিয়ে পরিকল্পনা জানালেন নেইমার
- পাকিস্তানে তেল-গ্যাসের নতুন বিশাল খনির সন্ধান
- ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় ফের যুক্তি উপস্থাপন আজ
- বুমরাহকে কেন টেস্টে অবসর নিতে বলছেন শোয়েব আখতার?
- যে কারণে সিরিয়ার সর্বোচ্চ পর্বত তড়িঘড়ি দখল করে নিল ইসরায়েল
- আদানির বিপুল দায় মেটাতে হিমশিম, এডিপি কাটছাঁট
- রহস্যের হাসি হেসে শাস্তি পেলেন গুলবাদিন
- ‘আজব আনপ্লাগড’ কনসার্ট নিয়ে জয়-এলিটা
- সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র