আমার এক প্রতিবেশী বললেন, তেলবাজিকে মানুষ খারাপ চোখে দেখে। তবে আমি মনে করি কি, তেলবাজি হচ্ছে একটা আর্ট। আমি বললাম, আপনি যেভাবে তেলবাজির প্রশংসা করছেন, তাতে আমি নিশ্চিত, আপনি নিজেও এই আর্টের সঙ্গে জড়িত। বলেন তো, আসলেই কি আপনি জড়িত? মানে আপনিও কি তেলবাজি করেন? প্রতিবেশী বললেন, না, এখন আমি আর তেলবাজি করি না। তবে লোকজনকে দিয়ে করাই। সিনিয়র হয়ে গেছি না? এখন সব কাজ নিজে করতে ভালো লাগে না। প্রতিবেশীর কথায় আমি বেশ বিরক্ত হলাম। বললাম, আপনাদের মতো লোকজনের তেলবাজির কারণেই সব রসাতলে যাচ্ছে। অতএব, যে কোনো উপায়ে তেলবাজি বন্ধ করতে হবে। প্রতিবেশী বললেন, আপনি খুব সুন্দর কথা বলেছেন। এ ধরনের কথা সচরাচর শোনা যায় না। কীভাবে শোনা যাবে? বলার মতো মানুষ তো থাকতে হবে! তবে আপনি আছেন, এটাই আমাদের জন্য বড় পাওয়া। আমি বললাম, আমি এমন কোনো সুন্দর কথা বলিনি, যেটার জন্য আপনি এত এত তৈলাক্ত কথা বলবেন। আবারও বলি, তেলটা একটু কম মারেন। আমার কথায় এবার রাগ করলেন প্রতিবেশী। তিনি আমাকে রেখেই চলে যাওয়া শুরু করলেন। আমি তাকে ডাক দিয়ে দাঁড় করিয়ে বললাম, যদি মনে করেন তেল না মেরে থাকতেই পারবেন না, তাহলে তেলটা এখন না মেরে শীতকালে মারবেন। এতে অন্তত ক্ষয়ক্ষতিটা হবে না। প্রতিবেশী জানতে চাইলেন কীসের ক্ষয়ক্ষতি। আমি বললাম, তেলমারা মানেই কিন্তু হাত কচলানো। আর খোলা হাত কচলাতে থাকলে হাতের রেখা উঠে যায়। কিন্তু কাজটা শীতকালে করলে বিরাট সুবিধা। যেহেতু তখন হাতে হাতমোজা থাকে। আর হাতমোজা পরিহিত অবস্থায় যতই তেল মারেন মানে হাত কচলান, হাতের কোনো ক্ষতি হবে না। অতএব সাবধান। নিজের ভালো কিন্তু পাগলেও বোঝে। প্রতিবেশী আমার কথার পিঠে কোনো কথা না বলে চলে গেলেন। কিন্তু যেহেতু প্রতিবেশী, অতএব আবার ঘুরে ফিরে দেখা হয়ে যাবে, এটাই তো স্বাভাবিক। আর হয়েও গেল দেখা। এবার আমি তাকে কিছু না বললেও তিনি এগিয়ে এসে বললেন, বাইরের তেলবাজি না হয় বন্ধ করলেন। কিন্তু সংসারে শান্তি বজায় রাখার জন্য যে তেলবাজিটা চালাতে হয়, এটা বন্ধ করবেন কীভাবে? আমি উত্তর না দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করলাম। বললাম, আপনার ঘরে কী ধরনের তেলবাজি হয়, একটু বলবেন? প্রতিবেশী বললেন, কী ধরনের তেলবাজি হয় না, তাই বলুন। আমার বউ রান্নাঘরে যেতে চায় না। মানে রান্না করতে চায় না। কিন্তু রান্না না করলে খাব কী? এই জন্য তেলবাজি করে তাকে দিয়ে রান্না করিয়ে নিতে হয়। আমি বললাম, কী টাইপের তেলবাজি? প্রতিবেশী বললেন, আমার স্ত্রী রান্নাঘরে যেতে চায় না গরমের জন্য। চুলার পাশে অনেক গরম না? আমি তখন তাকে বলি কি, চুলার আগুনের তাপে ঘেমে গেলে তোমার নাকের ডগায় যে ঘাম জমে, এই ঘামটাকে মনে হয় মুক্তার কণা। আহা, তোমাকে কী যে সুন্দর লাগে! আমি এই তেলবাজিটা করার সঙ্গে সঙ্গে স্ত্রী প্রয়োজনীয় রান্না তো করেই, অপ্রয়োজনেও গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে রান্নাঘরে। যাতে নাকের আগায় ঘাম জমে। আমি বললাম, আপনার তেলবাজির টেকনিকটা ভালো লেগেছে। আমাকে এমন দুই-চারটা টেকনিক শিখিয়ে দেন তো! প্রতিবেশী বললেন, মনে করেন আপনার স্ত্রী আপনাকে বাজারে পাঠানোর জন্য চাপ দিচ্ছে। আপনি তখন বলবেন কি, আজকাল বাজারে অনেক সুন্দরী আসে বাজার করার জন্য। কিন্তু আপনি আপনার স্ত্রীকেই পৃথিবীর সেরা সুন্দরী মনে করেন। ব্যস, এইটুকুই। এরপর আপনার স্ত্রী নিজেই বুঝবে কীভাবে আপনার বাজারে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করা যায়।
শিরোনাম
- আগামী বাজেটে ব্যবসায়ীদের জন্য প্রণোদনা কমবে : অর্থ উপদেষ্টা
- হাইকিং করতে গিয়ে প্রাণ গেল ফ্যাশন ব্র্যান্ড ম্যাঙ্গো’র প্রতিষ্ঠাতা আন্দিকের
- মোরেলগঞ্জে নির্জন ঘর থেকে কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার
- পাঁচ ঘণ্টার কম সময়ে সিরিয়ায় ৬০টির বেশি ইসরায়েলি বিমান হামলা : এনজিও
- চাঁদাবাজি বন্ধ ও নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের উদ্যোগ কম : রিজভী
- প্রথমবারের মতো ইউক্রেনযুদ্ধে রুশ বাহিনীর সঙ্গে অংশ নিলেন উত্তর কোরিয়ার সেনারা
- ফুটবলার থেকে জর্জিয়ার প্রেসিডেন্ট, কে এই কাভেলাশভিলি
- ‘বাংলাদেশকে কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে জামায়াতের নেতাকর্মীরা’
- তাহেরিকে গ্রেফতার করতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ
- জাবির হল থেকে ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
- দেশের দুই কারাগারে ডগস্কোয়াড মোতায়েন
- ৭ বছর পর সমাবেশ মঞ্চে আসছেন খালেদা জিয়া
- ‘পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে আপাতত কমিশন গঠন সম্ভব হচ্ছে না’
- সিরিয়ায় ইসরায়েলি আগ্রাসন, মুখ খুললেন বিদ্রোহী নেতা জোলানি
- রাজধানীর ‘কবজি কাটা’ আনোয়ার গ্রুপের ৫ সন্ত্রাসী গ্রেফতার
- বিজয় দিবসে সড়কে যানবাহন চলাচলে বিশেষ নির্দেশনা ডিএমপির
- জনপ্রশাসন সংস্কারে প্রস্তাবনা জমা দিয়েছে বিএনপি
- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ‘বঞ্চিত’ কর্মকর্তাদের অবস্থান
- গ্রিস উপকূলে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নৌকাডুবি: মৃত ৫, নিখোঁজ ৪০
- নাশতার সঙ্গে লটারি কিনে জিতলেন ১২ কোটি টাকা
প্রকাশ:
০০:০০, সোমবার, ০৭ অক্টোবর, ২০২৪
তেলবাজির তেলেসমাতি
ইকবাল খন্দকার
সর্বশেষ খবর