প্রাচীন রোমান শহর পম্পেইতে ভেসুভিয়াস আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর যে পরিবারটি সিঁড়ির নিচে আশ্রয় নিয়েছিল বলে মনে করা হতো, তাদের মধ্যে থাকা ‘মা’ আসলে একজন পুরুষ। এমনই তথ্য প্রকাশ করেছে বিজ্ঞানীদের নতুন ডিএনএ গবেষণা।
খ্রিষ্টাব্দ ৭৯ সালে মাউন্ট ভেসুভিয়াসের অগ্ন্যুৎপাতে পম্পেই শহর ধ্বংস হয়ে যায় এবং বাসিন্দারা ছাই ও ঝামায় চাপা পড়ে যায়। পরবর্তীতে প্রত্নতাত্ত্বিকরা প্লাস্টার ব্যবহার করে মৃতদের দেহের শূন্যতা পূরণ করেন এবং তাদের চিরস্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করেন।
সম্প্রতি ইতালি, জার্মানি এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীদের গবেষণা দল ‘কারেন্ট বায়োলজি’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক গবেষণায় জানায়, ১৪টি প্লাস্টার কাস্ট থেকে প্রাচীন পারমাণবিক ও মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়। তাদের মধ্যে পাঁচটি কাস্ট বিস্তারিতভাবে গবেষণা করা হয়েছে।
এই পরিবারটি ‘দ্য হাউস অফ দ্য গোল্ডেন ব্রেসলেট’ নামক একটি বিল্ডিংয়ে পাওয়া গিয়েছিল। ধারণা করা হতো, কঙ্কালের গায়ে থাকা স্বর্ণের বালা পরিহিত একজন মহিলা তার দুই সন্তানের মা এবং পাশে থাকা ব্যক্তি তাদের বাবা। কিন্তু ডিএনএ পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে, বালা পরিহিত ব্যক্তি একজন পুরুষ। তার কালো চুল ও গাঢ় ত্বক ছিল। এছাড়াও তার সঙ্গে ওই দুই শিশুর কোনো রক্তসম্পর্ক ছিল না।
আরেকটি গবেষণায় ‘হাউস অফ দ্য ক্রিপ্টোপর্টিকাস’ থেকে পাওয়া দুই জনের সম্পর্ক নিয়ে নতুন তথ্য বেরিয়ে এসেছে। আগে ধারণা করা হতো তারা মা-মেয়ে, দুই বোন বা প্রেমিক যুগল হতে পারে। কিন্তু নতুন ডিএনএ বিশ্লেষণে জানা গেছে, তাদের একজন পুরুষ এবং তারা রক্তসম্পর্কে যুক্ত ছিলেন না।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই আবিষ্কারটি পুরোনো ধারণাগুলোকে চ্যালেঞ্জ করে। তারা মনে করছেন, অতীতে প্লাস্টার কাস্টগুলোর অবস্থান ও ভঙ্গি পরিবর্তন করে গল্প তৈরির জন্য কাস্টগুলোর প্রত্নতাত্ত্বিক বিশ্লেষণে বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করা হয়েছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল