প্রথম ইনিংসে ব্যাটিংয়ের সময় ব্যথা পান। সেই ব্যথায় শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিংই করতে পারেননি নতুন বলের স্ট্রাইক বোলার শরিফুল ইসলাম। বাঁ হাতি পেসারের অভাবটা অনুভব করেছেন টাইগার অধিনায়ক মুমিনুল হক। আঙ্গুলের ইনজুরিতে শুধু দ্বিতীয় ইনিংস নয়, ২৩-২৭ মে মিরপুর টেস্ট থেকেও ছিটকে পড়েছেন শরিফুল। ছিটকে পড়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ থেকেও। অথচও নতুন বলে বাংলাদেশের মূল স্ট্রাইক পেসার বাঁ হাতি দীর্ঘকায় পেসার। এর আগে ডান হাতি পেসার তাসকিন আহমেদও ছিটকে গেছেন শ্রীলঙ্কা সিরিজ থেকে। দুজনেই লাল বলে টাইগারদের মূল স্ট্রাইক বোলার। দুই পেসারের ইনজুরিতে বাংলাদেশের পেস বোলিংয়ের শক্তি কমেছে কোনো সন্দেহ নেই। তাই টাইগার টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল তাকিয়ে আছে আইপিএলে খেলতে যাওয়া মুস্তাফিজুর রহমানের দিকে। বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজ আইপিএলে খেলছেন দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে। যদিও গত কয়েকটি ম্যাচের একাদশে সুযোগ পাননি কাটার মাস্টার। বসে থাকা মুস্তাফিজকে টেস্টে চাইছেন টাইগার অধিনায়ক। তবে বল ঠেলে দিয়েছেন বিসিবির দিকে, ‘আমি জানি না মুস্তাফিজ কয়টি টেস্ট (১৪ টেস্ট) খেলছে। বাংলাদেশের কোনো পেসারই অভিজ্ঞ নয়। শুনলে অবাকই হবেন। সবার মিলিয়ে ২০টা টেস্ট হয়েছে কি না জানি না। আমার কাছে মনে হচ্ছে না, এখন অভিজ্ঞতা খুব একটা বড় কিছু ওদের কাছে। মুস্তাফিজের বিষয়ে বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে।’
সাদা পোশাক ও লাল বলে খেলতে আগ্রহী নন মুস্তাফিজ। সেজন্য বিসিবির লাল বলের চুক্তিতেও নেই তিনি। বাংলাদেশ যখন টেস্ট সিরিজ খেলছে ঘরের মাটিতে এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট খেলেছে, তখন মুস্তাফিজ আইপিএল খেলতে ভারতে গেছেন। মুস্তাফিজ তার ৭ বছরের ক্যারিয়ারে মাত্র ১৪ টেস্ট খেলেছেন। তারপরও তিনিই দেশসেরা পেসার। মিরপুরের ধীরগতির উইকেটে মুস্তাফিজের কাটার বিধ্বংসী রূপ নিতে পারে। সেজন্যই দলের অনভিজ্ঞ বোলিং বিভাগকে শক্তিশালী করতে মুস্তাফিজকে চাইছেন মুমিনুল, ‘এখানে আপনার দেখতে হবে মুস্তাফিজ আসলে লাল বলে কত দিন খেলছে। অনেক কিছু নির্ভর করছে। কত দিন খেলছে না, খেলছে। ফিটনেসের বিষয় তো আছেই। এখন যদি অবশ্যই দরকার হয় তাহলে তো দরকার। এখন ফ্রন্টলাইনের দুজন পেসার (তাসকিন ও শরিফুল) চোটে পড়েছেন। সে যদি খেলতে পারে, তাহলে তো খেলতে পারে।’ এখন সময়ই বলবে মিরপুর টেস্টে মুস্তাফিজকে দেখা যাবে কি না? কিংবা বিসিবি তাকে খেলাবে কি না? চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের ব্যাটিং ভালোই হয়েছে। সেঞ্চুরি করেছেন বাঁ হাতি ওপেনার তামিম ইকবাল ও সিনিয়র ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। তামিম ১৩৩ ও মুশফিক ১০৫ রান করেন। ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরির পথে মুশফিক বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে ৫ হাজার রানের মাইলফলক গড়েছেন। বর্তমানে তার রান ৮১ টেস্টে ৫০৩৭। তামিমও অপেক্ষায় রয়েছেন পাঁচ হাজারি ক্লাবের সদস্য হতে। ৬৬ টেস্টে তার রান ৪৯৮১। হাফসেঞ্চুরির ইনিংস রয়েছে মাহামুদুল হাসান জয় (৫৮) ও লিটন দাসের (৮৮)। তবে আবারও ব্যর্থ হয়েছেন মুমিনুল। আউট হয়েছেন মাত্র ২ রানে। গত ৫ ইনিংসে দুই অংকের রানের দেখা পাননি টাইগার অধিনায়ক। সর্বশেষ হাফসেঞ্চুরির ইনিংস খেলেন মুমিনুল মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে চলতি জানুয়ারিতে। ঐতিহাসিক জয়ের টেস্টে খেলেছিলেন ৮৮ রানের ইনিংস। ক্রাইস্টচার্চের করেছিলেন ৩৭ রান। পরের পাঁচ ইনিংসে মোট রান ১৫। তারপরও নিজের ফর্ম নিয়ে চিন্তিত নন মুমিনুল, ‘আমি আসলে আমাকে নিয়ে ভাবি না। আমি আমার ব্যাটিং নিয়ে চিন্তিত নই।’
মিরপুর টেস্টের যে স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বিসিবি, তাতে নেই আহত শরিফুল। চট্টগ্রাম টেস্টেও বাকি সবাই আছেন। এখন দেখা যাক, পেস বিভাগের শক্তি বাড়াতে মুস্তাফিজের দেখা যায় কি না?
দ্বিতীয় টেস্টের দল ঘোষণা
মুমিনুল হক (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, লিটন কুমার দাস, ইয়াসির আলি, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান, ইবাদত হোসেন, খালেদ আহমেদ, রেজাউর রহমান রাজা, শহিদুল ইসলাম, নুরুল হাসান সোহান এবং মোসাদ্দেক হোসেন।