মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

মেহেদি ‘রাঙা’ রংপুর

আসিফ ইকবাল, সিলেট থেকে

মেহেদি ‘রাঙা’ রংপুর

ছবি : রোহেত রাজীব, সিলেট থেকে

১২ বলে দরকার ১৪ রান। ১৯ নম্বর ওভারে সালমান ইরশাদের প্রথম দুই বলে দুটি চার হাঁকান আজমতউল্লাহ কামারজাই। দুই চারে ব্যবধান কমে দাঁড়ায় ৬ রানে। রংপুর রাইডার্সের সাজঘরে তখন আগাম জয়ে উৎসবমূখর পরিবেশ। ক্রিকেটাররা বের হয়ে আসেন ডাগ আউটে। পরের ৩ বলে এক রান নেন কামরাজাই। সমীকরণ দাঁড়ায় ৭ বলে ৫ রান। হাতে ৫ উইকেট। কোনো চাপ নেই রংপুরের। ম্যাচ ছেড়ে দিয়েছে নাসির হোসেনের ঢাকা ডমিনেটর্স। ১৯ নম্বর ওভারের শেষ বলে তুলে মারেন পাকিস্তানের মোহাম্মদ নাওয়াজ। বল সীমানা রশি টপকে ছক্কা হতেই রংপুরের কোচ সোহেল ইসলাম হাত মেলান ম্যাচ সেরা মেহেদি হাসানের সঙ্গে। এরপর দলের ক্রিকেটাররা একে একে সবাই সবার সঙ্গে পঞ্চম জয়ের উচ্ছ্বাস মাখামাখি করেন আনন্দে। নাওয়াজের ছক্কায় এক ওভার হাতে রেখেই ৫ উইকেট জয় পায় রংপুর। নুরুল হাসান সোহানের রংপুরের এটা ৮ ম্যাচে ৫ নম্বর জয়। হেরে বিপিএল এখন আনুষ্ঠানিকতায় পরিণত হয়েছে ঢাকার। দলটির পয়েন্ট ৯ ম্যাচে ২। বাকি ২ ম্যাচে জিতলেও কোয়ালিফাইয়ার্স খেলার কোনো সুযোগ নেই। একই সমীকরণ ৯ ম্যাচ ২ জয় পাওয়া চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সেরও।

টার্গেট ১৪৫ রান। ওভার প্রতি ৭.২৫। আকাশসমান নয়। ইনিংসের নবম বলে সাজঘরে ফেরেন মোহাম্মদ নাঈম। এরপর ব্যাটিংয়ে আসেন মেহেদি। রনি তালুকদারের সাথে যোগ করেন ৬৩ রান। রনি ২৮ বলে ২৯ রান করলেও ম্যাচ সেরা মেহেদি খেলেন ৭২ রানের ইনিংস। ৪৩ বলের ইনিংসটিতে ছিল ৭টি চার ও ৫টি ছক্কা। চলতি বিপিএলে মেহেদির এটা প্রথম হাফসেঞ্চুরি। ডান হাতি মেহেদি মূলতঃ অফ স্পিন অলরাউন্ডার। এটা জেনেই তাকে উপরে ব্যাটিং করান কোচ সোহেল, ‘সে মূলত একজন স্পিন অলরাউন্ডার। তারপরও যে রকম ব্যাটিং করে, তাতে তাকে উপরে ব্যাটিং করানোই যায়। আমরাও সেরকমটা ভেবেই করেছি। সে সফল হয়েছে। যদি উপরে খেলানো না হয়, তাহলে তাকে ৭-৮ নম্বরে খেলাতে হতো। কিন্তু তার মতো ক্রিকেটারকে এত নিচে ব্যাটিং করানো ঠিক নয়।’ ৮ ম্যাচে মেহেদি ১২০.৪২ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন ১৪৩। উইকেট নিয়েছেন ৪টি।

বিপিএলের অন্যতম ধারাবাহিক ক্রিকেটার নাসির হোসেন। ঢাকা ডমিনেটর্সের ব্যাটিংয়ের মূল ভরসা। প্রতিটি ম্যাচে রান করে দলকে লড়াকু পজিশনে নিয়ে যাচ্ছেন। ৮ ম্যাচে ১২৫.২৭ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন ২৯১। ২৩১ বলের মুখোমুখিতে ছক্কা মেরেছেন ৬টি এবং বাউন্ডারি ২৮টি। এই রান করছেন মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করে। গতকাল তিনি ২৯ রান করেছেন ২২ বলে ৩ চার ও এক ছক্কায়। তার আগ্রাসী ব্যাটিং এবং আফগানিস্তানের উসমান খানের ৫৫ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৩ রানে ভর করে ঢাকার সংগ্রহ ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৪৪ রান। উসমান ব্যাটিং করেন ওয়ান ডাউনে। ছন্দে থাকা অধিনায়ক নাসির ব্যাটিং করেন ৬ নম্বরে। তিনি যখন ব্যাটিং নামেন, তখন ঢাকার স্কোর ১১.১ ওভারে ৬৯ রান। পরের ৫৫ বলে স্কোর কার্ডে যোগ হয় ৭৫ রান। যদি তিনি অ্যালেক্স ব্ল্যাক ও মোহাম্মদ মিথুনের আগে ব্যাটিং করতেন, তাহলে নিশ্চিত করেই বলা যায়, ঢাকার স্কোর আরও বেশি হতো। কেননা বিশ্বব্যাপী দলের সেরা ব্যাটাররাই উপরে ব্যাটিং করেন। গতকাল নাসির রান আউট হন ১৮.৪ ওভারে। তবে ঢাকার তিন ব্যাটার মিজানুর রহমান, সৌম্য সরকার ও মোহাম্মদ মিথুনের আউট ছিল দৃষ্টিকটূ। আজমতউল্লাহ কামারজাইয়ের ইনসুইংয়ে জোড়া পায়ে খেলতে যেয়ে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হন। সৌম্য ১১ বলে ১২ রান করে কামারজাইয়ের বলে ফ্লিক খেলে পয়েন্টে তালুবন্দি হন শামীম হোসেনের। মিথুন আউট হন রাকিবুল হাসানকে কোথায় মারবেন ঠিক করতে না পেরে। কামারজাই ২ উইকেট নিলেও মিতব্যয়ী ছিলেন বাঁ হাতি স্পিনার রাকিবুল। তার স্পেল ৪-০-২১-১।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর