দেশের ক্রীড়াঙ্গনে খুবই পরিচিত মুখ। এক নামে যাকে সবাই চেনে ও জানে। সেই কিংবদন্তি ফুটবলার মো. মহসিন প্রায় ৯ মাস ধরে নিখোঁজ। তার পরিবার হন্য হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছেন। কোথাও মিলছে না মহসিনের সন্ধান। দেশের অন্যতম সেরা এ গোলরক্ষক দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ তা একাধিক মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। এরপরও দেশের ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা বাফুফের নীরবতা সবাইকে বিস্মিত করেছে। এখানে ক্রীড়া পরিষদেরও কি কোনো দায়িত্ব নেই? তার বোন রুমা ফেরদৌসি ভাইয়ের ছবি নিয়ে এখনো নানা জায়গায় ছুটে বেড়াচ্ছেন। থানা, রেলওয়ে স্টেশন, বাস স্টেশন কোনো জায়গা বাদ রাখেননি। একটাই আশা যদি হারানো ভাইকে খুঁজে পাওয়া যায়। মিলছে না কোনো সন্ধান এ বিখ্যাত গোলরক্ষকের। নানা কারণে মানসিকভাবে অসুস্থ জাতীয় দলের তারকা এ ফুটবলার এর আগে গত বছর মার্চেও একবার নিখোঁজ হন। সেবার তিন দিন পরই তাকে খুঁজে পাওয়া যায়। এরপর গত বছর ২৬ আগস্ট মালিবাগের বাসা থেকে বের হওয়ার পর আর ফেরেননি। পরিবারের সদস্যরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন আবারও মহসিন ফিরে আসবেন। যার নাম দেশের মানুষ গর্বের সঙ্গে উচ্চারণ করতেন। যাকে দেখা মাত্রই হাজার হাজার ভক্ত ছুটে আসতেন। সেই মহসিনের খোঁজার দায়িত্ব কি শুধু তার পরিবারের? এখানে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কি কিছু করার নেই? তিনি তো দেশের হয়ে সুনামের সঙ্গে খেলেছেন। তার খোঁজ করার দায়িত্ব কি বাফুফের মধ্যে পড়ে না? যাক দেরিতে হলেও মহসিনের স্বজনদের আকুতি বাফুফের কর্মকর্তাদের নাড়া দিয়েছে। ফেডারেশনের সিনিয়র সহসভাপতি ও বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান ফেডারেশনের সবার সঙ্গে আলাপ করে উদ্যোগ নিয়েছেন মহসিনের ভাইবোনদের ফেডারেশনে ডেকে আলাপ করে তার সন্ধানে নামার। ইমরুল হাসান বলেন, ‘বিষয়টি খুবই মানবিক, এত বড় ফুটবলারের দীর্ঘদিন ধরে সন্ধান মিলছে না। বাফুফের উচিত ছিল বিষয়টি আরও আগে গুরুত্ব দেওয়া। স্বীকার করছি আমরা তা পারেনি। কেন পারেনি জবাব আমার একার পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। বিষয়টি অবশ্যই দুঃখজনক। মহসিনের পরিবার কীভাবে দিন পার করছে তা অনুভব করছি।’
ইমরুল বলেন, ‘মহসিন ভাই শুধু ফুটবল নয় দেশের ক্রীড়াঙ্গনেও জনপ্রিয় মুখ। দেশের ফুটবল জনপ্রিয় করার পেছনে তার অবদান ভোলার নয়। দেশের জনপ্রিয় দুই দল মোহামেডান ও আবাহনীতে আস্থার সঙ্গে খেলেছেন। ১৯৯৪ সালে মুক্তিযোদ্ধা শক্তিশালী দল গড়ার পর সেখানে তিনি যোগ দেন। তিনিই একমাত্র ফুটবলার বড় তিন দলকে নেতৃত্ব দেন। অনেক সাফল্যের অংশীদার তিনি। জাতীয় দলেও আস্থার পরিচয় দিয়েছেন। আমি নিজেও মহসিন ভাইয়ের ভক্ত। আমার ব্যক্তিগত অভিমত স্বাধীনতার পর ১০ জন জনপ্রিয় ফুটবলারের নাম এলে সেই তালিকায় মহসিন ভাইও থাকবেন। শান্টু ভাইয়ের পর অনেকেই তাকে সেরা গোলরক্ষক বলে থাকেন। গ্যালারিতে বসে তার খেলা দেখেছি। এখনো চোখে ভাসে ১৯৮২ সালে সালাউদ্দিন ভাইয়ের পেনাল্টি শট মহসিন ভাইয়ের রক্ষা করাটা। এমন একজন গ্রেট ফুটবলারের দীর্ঘদিন খোঁজ না পাওয়াটা সত্যিই বেদনাদায়ক। বাফুফে অবশ্যই তার সন্ধানে নামবে। তবে তার পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে। কারণ এখানে তাদের অনুমতির প্রয়োজন। বাফুফে কীভাবে হারানো মহসিন ভাইকে খুঁজবে তা পরিকল্পনা করে এগোবে। এখানে অনেক প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতারও প্রয়োজন রয়েছে।’