এনামুল হক বিজয় ফের ব্যর্থ। গলের পর কলম্বোতেও ওপেনার বিজয়ের ব্যাটে রান নেই। কাকতালীয় বিষয়, গলে প্রথম ইনিংসে তার শূন্য রানের ইনিংসটি ছিল ১০ বলে। সিংহলিজ স্পোর্টস গ্রাউন্ডেও সেই একই দৃশ্য। ১০ বলে শূন্য রান। এবার বোল্ড হন আভিস্কা ফার্নান্দোর বলে ইনার এজড হয়ে। ছন্দে না থাকার পরও বিজয়কে খেলিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন টিম ম্যানেজমেন্ট। ধানমন্ডি রিয়া গোপ ওমেন্স কমপ্লেক্সে বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদার রজতজয়ন্তী উদ্যাপনের অনুষ্ঠানে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলও সরাসরি কিছু বলেননি এনামুল বিজয়ের ব্যাটিং ব্যর্থতা নিয়ে। শুধু জানিয়েছেন টেস্টে সাফল্য পেতে মাথার ব্যবহার করতে হয়, ‘আমি যে পজিশনে আছি, বোর্ড সভাপতি হিসেবে আমার পক্ষে এটা বলা সম্ভব না। যদি আমাকে খেলোয়াড় বা কোচ হিসেবে জিজ্ঞেস করতেন, তাহলে হয়তো বলতে পারতাম। ভালো হবে কোচের কাছে প্রশ্নটা করা। আমি মনে করি টেস্ট ক্রিকেটে স্কিল একটা জায়গায় থাকে। কিন্তু মূল যে জিনিস, সেটা হচ্ছে টেস্ট ক্রিকেট মাথার খেলা।’ বিজয়ের ব্যর্থতার দিনে ভালো কাটেনি বাংলাদেশের।
টাইগারদের প্রথম ইনিংসে ২০ রান ঊর্ধ্ব ব্যক্তিগত স্কোর রয়েছে ৬টি। নেই কোনো হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস। নেই কোনো বড় জুটি। পঞ্চম উইকেটে সর্বোচ্চ ৬৭ রানের জুটি গড়েন মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। এমন ব্যাটিং ব্যর্থতায় কলম্বোয় প্রথম দিন পার করেছে বাংলাদেশ ৮ উইকেটে ২২০ রান তুলে।
গলে নাজমুল বাহিনীর সেঞ্চুরি ছিল ৩টি। প্রথম ইনিংসে ২টি এবং দ্বিতীয় ইনিংসে একটি। উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। মুশফিক করেছিলেন আরেকটি। গলে প্রথম ইনিংসে একটি ডাবল সেঞ্চুরির (২৬৪) জুটি ও একটি দেড় শ রানের (১৫৯) জুটি এবং দ্বিতীয় ইনিংসেও শতরানের (১০৯) রানের জুটি ছিল। গতকাল বড় স্কোরের টার্গেটে টস জিতে ব্যাট করতে নামে টাইগাররা। পঞ্চম ওভারে সাজঘরে ফেরেন এনামুল বিজয় রানের খাতা না খুলেই। এরপর অবশ্য ৩৮ রানের জুটি গড়েন সাদমান ও মুমিনুল। সাবেক অধিনায়ক মুমিনুল আউট হন ব্যক্তিগত ২১ রানে। একপর্যায়ে ৭৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা। গল টেস্টের উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরি হাঁকানো নাজমুল আউট হন ব্যক্তিগত ৮ রানে। উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করে টাইগার অধিনায়ক টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়েছেন ২১ ধাপ। বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে ৪ উইকেট হারিয়ে দল যখন কোণঠাসা, তখন পঞ্চম উইকেটে ৬৭ রানের জুটি গড়ে দলকে টেনে নেন মুশফিক ও লিটন। এটাই দলের উল্লেখযোগ্য জুটি। দুজনে ভালো ব্যাটিং করতে করতে তাড়াহুড়া করেন। ফলে ব্যর্থ হন বড় ইনিংস খেলতে। দুজনে একবার করে জীবনও পান। জীবন পাওয়ার পরের ওভারে উইকেটরক্ষক কুল মেন্ডিসের গ্লাভসবন্দি হন লিটন, ব্যক্তিগত ৩৪ রানে। মুশফিক আউট হন ৩৫ রানে। সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন ওপেনার সাদমান ইসলাম। সিরিজে প্রথমবার খেলতে নেমে ৩১ রান করেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
টেস্টের প্রথম দিন বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ ছিল প্রায় ২ ঘণ্টা। এজন্য খেলা হয়েছে ৭১ ওভার। কলম্বো টেস্টে টাইগাররা খেলছে মেহেদি হাসান মিরাজকে নিয়ে। জ্বরের জন্য গলে খেলেননি টাইগার সহ অধিনায়ক। তিনি ফেরায় একাদশের বাইরে থাকতে হচ্ছে জাকের আলি অনিককে। কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস গ্রাউন্ডের উইকেটে ব্যাটাররা হয়তো সুবিধা পাবেন বেশি। তারপরও মিরাজের অন্তর্ভুক্তিতে ৩ স্পিনার নিয়ে খেলছে বাংলাদেশ। এ মাঠে অবশ্য এর আগে যে ৩টি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ, হারের সংখ্যা শতভাগ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ : প্রথম ইনিংস, ২২০/৮, ৭১ ওভার (সাদমান ৪৬, মুমিনুল ২১, মুশফিক ৩৫, লিটন ৩৪, মিরাজ ৩১, নাঈম ২৫; আসিথা ১৪-২-৪৩-২, ভিশ্ব ১৬-৩-৩৫-২, রত্নায়াকে ১৬-১-৬৩-১, ধনাঞ্জায়া ৫-০-১৫-১, দিনুশা ৯-৩-২২-২)।