আফঈদা খন্দকার প্রান্তি। বাংলাদেশের নারী ফুটবলের এক অগ্রদূত, ভরসার নাম। বয়স মাত্র ১৮। যে বয়সে তাজা প্রাণে আসে কত মন্ত্রণা, ঠিক সে সময়ই কাঁধে তুলে নিয়েছেন এক দুঃসাহসিক দায়িত্ব। দলে ভাঙন ও নেতৃত্ব সংকটের টালমাটাল সময়। সাবেক অধিনায়ক সাবিনা খাতুনসহ কিছু সিনিয়র ফুটবলার বিদ্রোহ করলে দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। তখন থেকেই নেতৃত্ব ও রক্ষণভাগের ফাঁকা জায়গা একাই সামলাচ্ছেন আফঈদা। জাতীয় নারী ফুটবল দলের পাশাপাশি বয়সভিত্তিক দলেরও হাল ধরেছেন এ ভাগ্যবতী তরুণী। তার আত্মবিশ্বাসী পারফরম্যান্স ও নেতৃত্বের পরপরই পাল্টে গেছে দলের গতিপথ।
সফলতা যেন এখন দলের প্রাত্যহিক ঘটনা। মেয়েদের একের পর এক আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে সফলতায় আনন্দিত গোটা দেশ। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে লাল-সবুজের পতাকা উড়াচ্ছেন জাতীয় ও বয়সভিত্তিক দলের নারী ফুটবলাররা। বিগত দুই মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্ব নিশ্চিত, ঘরের মাঠে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয় এবং এবার প্রথমবারের মতো অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল দলও নিশ্চিত করল এশিয়ান কাপের মূল পর্বে। বাংলাদেশের ফুটবলে মেয়েরা যে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে এসব সফলতা তারই প্রতিফলন। আর এসব স্বপ্নযাত্রার কান্ডারি আফঈদা খন্দকার। আফঈদার এ অসাধারণ নেতৃত্বের মন্ত্র- ‘চাপ নিলে চাপ, না নিলে কিছুই না।’ সেই মনোভাবেই রক্ষণে ছিলেন অনড়, দলের সংকটে ছিলেন সাহসী দিশারি। ভালোভাবেই রপ্ত করেছেন কোচ জেমস পিটার বাটলারের কৌশল। আর আস্থার প্রতিদান দিচ্ছেন কাজে। অথচ সাতক্ষীরার এ তরুণীর জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া নিয়েই ছিল প্রশ্ন। আজ তিনি ইতিহাসের প্রথম নারী অধিনায়ক, যাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয় ও বয়সভিত্তিক নারী দল জায়গা করে নিয়েছে এশিয়ান কাপে। মাসখানেক আগে প্রথমবারের মতো নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলার ইতিহাস গড়ে জাতীয় নারী ফুটবল দল। এবার বয়সভিত্তিক পর্যায়েও প্রথমবারের মতো এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে আফঈদার দল। যার মধ্য দিয়ে দেশের ফুটবলপ্রেমীরা পেল দ্বিগুণ আনন্দের উপলক্ষ। এ ছাড়া সম্প্রতি নারী জাতীয় দল পেয়েছে ফিফা থেকে বড় সুখবর। একলাফে ২৪ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ।