এনবিআরকে বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও ব্যবস্থাপনা দুুটি পৃথক বিভাগ করা নিয়ে যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসনে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা সম্ভব বলে মনে করে অর্থ মন্ত্রণালয়। আজ বুধবার এ সংক্রান্ত একটি ব্যাখ্যা প্রদান করেছে মন্ত্রণালয়।
রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ নিয়ে আলোচনা করতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকালে বিসিএস (কর) ও বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা। সরকার প্রত্যাশা করে যে, এই আলোচনার মাধ্যমে সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়ে সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জারি করা অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা সম্ভব হবে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে দেশের সুশীল সমাজ, ব্যবসায়ী সংগঠন, অর্থনীতিবিদ এবং উন্নয়ন সহযোগীরা রাজস্ব কার্যক্রমের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজস্ব নীতি ও বাস্তবায়নের কাজ পৃথকীকরণের পরামর্শ দিয়ে আসছেন। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে গত বছরের ৯ অক্টোবর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সংস্কার বিষয়ে একটি পরামর্শক কমিটি গঠন করে। ওই পরামর্শক কমিটির দাখিল করা রিপোর্ট পর্যালোচনাপূর্বক গত ১৬ জানুয়ারি উপদেষ্টা পরিষদ রাজস্ব নীতি প্রণয়ন এবং প্রণীত নীতি বাস্তবায়নপূর্বক রাজস্ব আহরণ-এ দুটো কার্যক্রম পৃথকীকরণের বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেয়।
পরবর্তীতে বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ও বিসিএস (কর) ক্যাডারের কর্মকর্তারা তাদের স্ব-স্ব অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের তত্ত্বাবধানে অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে আলোচনাপূর্বক রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর খসড়া প্রণয়ন করে মার্চের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে দাখিল করে। দাখিল করা অধ্যাদেশের খসড়া পরিমার্জিত আকারে ১২ মে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে জারি করা হয়।
অধ্যাদেশ জারির পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ওই অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে গত ২০ মে অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ১৩ প্রতিনিধির উপস্থিতিতে ঘণ্টাব্যাপী সভা হয়। ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়, রাজস্ব সংস্কার কমিটিসহ সব অংশীজনের সঙ্গে বিশদ আলোচনাক্রমে জারি করা অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার পর অধ্যাদেশটি বাস্তবায়ন করা হবে। এতৎসত্ত্বেও আন্দোলন চলমান থাকায় ২৫ মে অর্থ উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জারি করা অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে মর্মে অবহিত করা হলে আন্দোলনকারীরা তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন। এরই মধ্যে ২২ জুন থেকে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আবারও আন্দোলন শুরু হলে অর্থ উপদেষ্টা আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় বিসিএস (কর) এবং বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ক্যাডারের প্রতিনিধিদেরকে তার সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন।
সরকার প্রত্যাশা করে, এই আলোচনার মাধ্যমে সব ভুল বোঝাবুঝির অবসানপূর্বক সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জারি করা অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা সম্ভব হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে যার যার দপ্তরে অবস্থান করে অর্থবছরের শেষ কর্মদিবসগুলোতে রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমে মনোনীবেশ করার জন্য অর্থ উপদেষ্টা অনুরোধ করেছেন।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ