সুদানের মানবিক পরিস্থিতি দিন দিন আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। বিশেষ করে আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফের (র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস) হাতে এল-ফাশের শহর পতনের পর থেকে উত্তর দারফুরে বাস্তুচ্যুতির সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-এর তথ্য অনুযায়ী, গত ২৬ অক্টোবর আরএসএফ শহরটি দখল করার পর থেকে এ পর্যন্ত ৮১ হাজারেরও বেশি মানুষ এল-ফাশের ও এর আশপাশের গ্রামগুলো ছেড়ে পালিয়েছেন। এদের বেশিরভাগই পায়ে হেঁটে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন।
এল-ফাশের থেকে পালিয়ে আসা এই হাজার হাজার মানুষের প্রধান গন্তব্য হলো নিকটবর্তী টাভিলা শহর। তবে, এই ছোট্ট শহরটিতে ইতোমধ্যেই গত দেড় বছরের যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত হওয়া আরও লক্ষ লক্ষ মানুষ আশ্রয় নিয়ে আছেন। ফলে সেখানে মানবিক সাহায্য অপ্রতুল এবং পরিস্থিতি অত্যন্ত কঠিন।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো বেঁচে ফেরা মানুষদের কাছ থেকে পাওয়া অসংখ্য প্রতিবেদনে আরএসএফ যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন এবং মুক্তিপণের জন্য আটকে রাখার মতো জঘন্য অপরাধের অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। খাদ্যসংকট তীব্র হচ্ছে, সেই সঙ্গে কলেরা ও অন্যান্য মারাত্মক রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে।
জাতিসংঘের মতে, সুদান বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক ও বাস্তুচ্যুতি সংকটের সম্মুখীন। দেশজুড়ে প্রায় সাড়ে ৯ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুতদের মধ্যে ৫১ শতাংশই হলো ১৮ বছরের কম বয়সী শিশু। গত বছর এপ্রিল মাসে সুদান সামরিক বাহিনী এবং আরএসএফের মধ্যে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে উভয় পক্ষই যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত হয়েছে। আরএসএফের বিরুদ্ধে দারফুরে গণহত্যার অভিযোগও এনেছে জাতিসংঘ।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল