২০১৫ সালে ধারাবাহিক পারফর্ম করে ক্রিকেট বিশ্বকে নাড়িয়ে দিলেও চলতি বছরের প্রথম টুর্নামেন্টে হোঁচট খেলে বাংলাদেশ। তাও আবার আফগানিস্তানের মতো আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশের কাছে সিরিজ হেরে আসা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সব মিলিয়ে একটা লজ্জার সিরিজ শেষ করলো টাইগাররা।
হারলে সিরিজ হার, আর জিতলে সিরিজ ড্র- এমন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে সফরকারীদের দেওয়া ১৮১ রানের বিশাল টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশে। কিন্তু বড় রান তাড়া করতে যা যা দরকার তার কোনোটায় দেখাতে পারেনি মাশরাফি বাহিনী। জিম্বাবুয়ে যেখানে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৮০ রান সংগ্রহ করেছে, সেখানে বাংলাদেশ কিনা ৬ বল বাকি থাকতেই ১৬২ রানে অলআউট। হার ১৮ রানের।
বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের আসা যাওয়ার মাঝে একটু ব্যাতিক্রম ছিলেন কেবল মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। যদিও ইমরুল কায়েস, নুরুল ইসলাম ও মাশরাফি ছোট ছোট ইনিংস খেলে ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তারপর রিয়াদ না দাঁড়ালে হারের রানের ব্যবধান আরও অনেক বেশি হতো। ৪১ বলে ৫৪ রান করে দলীয় ১৩৪ রানে যখন রিয়াদ আউট হন তখনই ম্যাচ হেলে পড়ে জিম্বাবুয়ের দিকে। যদিও সে সময় মাঠে ছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি। তবে তিনি বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। রিয়াদের আউটের পর স্কোরবোর্ডে মাত্র ৪ রান যোগ করেই সাজঘরে ফেরেন, যার দিকে তাকিয়ে ছিলেন দেশের কোটি কোটি ক্রিকেট ভক্ত। এরপর আবু হায়দার রনি এবং আরাফাত সানিরা চেষ্টা করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১৮ রানে হারে সিরিজ হাতছাড়া বাংলাদেশের।
এর আগে, শুক্রবার দুপুরে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন জিম্বাবুয়ের দলপতি এলটন চিগুম্বুরা। সফরকারীদের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে আসেন ইনফর্ম ব্যাটসম্যান হ্যামিলটন মাসাকাদজা ও ভুসি সিবান্দা। ইনিংসের প্রথম ওভারে বোলিং আক্রমণে এসে টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা ভুসি সিবান্দাকে সাকিবের ক্যাচ বানিয়ে প্যাভিলনে পাঠান।
এরপর তিন নম্বরে নামেন রিচমন্ড মুতুম্বামি। তাকে সঙ্গে নিয়ে স্কোরবোর্ডে ৮০ রান যোগ করেন হ্যামিলটন মাসাকাদজা। ইনিংসের ১১তম ওভারে আবু হায়দার রনির বলে বোল্ড হন মুতুম্বামি। আউট হওয়ার আগে ২৫ বলে তিনটি চার আর একটি ছক্কায় ৩২ রান করেন তিনি।
দলীয় ৮৪ রানের মাথায় সফরকারী জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় উইকেট পড়লেও তাদের রানের চাকা ঘোরাতে থাকেন হ্যামিলটন মাসাকাদজা। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দশম অর্ধশতকের দেখা পান অভিজ্ঞ এ ব্যাটসম্যান। ম্যালকম ওয়ালারকে সঙ্গে নিয়ে আরও ৬১ রান যোগ করেন মাসাকাদজা। ইনিংসের ১৬তম ওভারে তাসকিন ফেরান ব্যাট হাতে ঝড় তোলা ম্যালকম ওয়ালারকে। মাত্র ১৮ বলে একটি চার আর তিনটি ছক্কা হাঁকিয়ে ওয়ালার করেন ৩৬ রান। তাসকিনের বলে বোল্ড হন তিনি।
১৪৫ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারানোর পর বড় সংগ্রহের দিকে এগুতে থাকে জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের ১৭তম ওভারে আক্রমণে এসে সাকিব আল হাসান ফিরিয়ে দেন সিকান্দার রাজাকে। এ উইকেটের মধ্য দিয়ে সাকিব টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ৫০ উইকেট নেওয়ার মাইলফলক স্পর্শ করেন।
মাসাকাদজা ৫৮ বলে ৯৩ রান করে অপরাজিত থাকেন। তার ইনিংসে ছিল ৮টি চার আর ৫টি ছক্কার মার। বাংলাদেশের হয়ে একটি করে উইকেট নেন মাশরাফি, তাসকিন, রনি ও সাকিব।
বিডি-প্রতিদিন/২২ জানুয়ারি, ২০১৬/মাহবুব